পুলিশের বাধায় ১১ দফা দাবি আদায়ে জাতীয় সংসদ অভিমুখে পদযাত্রা কর্মসূচি করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা। পরে শাহবাগ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) অভিমুখে পদযাত্রা করে তাঁরা চলে গেছেন। আগামী রোববার আবার বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেয় বিপুলসংখ্যক পুলিশ। পুলিশের অবস্থানের মধ্যে জাদুঘরের সামনেই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ‘সংক্ষুব্ধ প্রতিবন্ধী নাগরিক সমাজের’ ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা৷
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ১১ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মাসিক ভাতা পাঁচ হাজার টাকা করা, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ভাতা দুই হাজার টাকা করা, সরকারি চাকরিতে প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ নীতিমালা।
আজ সকালে শাহবাগ থেকে জাতীয় সংসদ অভিমুখে পদযাত্রা কর্মসূচি করার কথা ছিল প্রতিবন্ধী নাগরিক সমাজের৷ কিন্তু কর্মসূচির জন্য আনা মাইক সকালেই পুলিশ সদস্যরা নিয়ে যান বলে অভিযোগ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের৷ তবু জাদুঘরের সামনে অবস্থান করেন তাঁরা। জাদুঘরসংলগ্ন সড়কে প্রতিবন্ধীদের এই অবস্থান কর্মসূচির সামনে-পেছনে সতর্ক অবস্থান নেয় বিপুলসংখ্যক পুলিশ৷ তাঁদের সঙ্গে কয়েকবার কথা বলতে দেখা যায় প্রতিবন্ধী সমাজের নেতাদের৷ তবে পুলিশ তাঁদের পদযাত্রা করার সুযোগ দেয়নি
বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা পদযাত্রার জন্য প্রস্তুত হলে সামনে অবস্থান নেয় পুলিশ৷ এ সময় ১৮ জুন বিক্ষোভ কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। একপর্যায়ে টিএসসি অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল করার ঘোষণা দেন তাঁরা। তখন প্রতিবন্ধী নেতাদের একাংশ টিএসসি হয়ে আবার শাহবাগ কিংবা জাতীয় প্রেসক্লাবে যাওয়ার কথা বলেন৷
এরপর পুলিশের সঙ্গে কথা বলে বেলা পৌনে একটার দিকে আবার শাহবাগ থেকে টিএসসি অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা৷ এ সময় তাঁদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আমরা নিয়মতান্ত্রিক নাগরিক, বিশৃঙ্খলা করি না। ১৮ জুন আমরা নিজ নিজ এলাকায় বিক্ষোভ করব। টিএসসিতে গিয়ে আমাদের পদযাত্রা শেষ হবে। এরপর আমরা যে যাঁর মতো বাসায় চলে যাব। আমরা সরকারের সঙ্গে সংঘাত চাই না, দাবির বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।’
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ১১ দফা দাবির মধ্যে আরও রয়েছে হাজার কোটি টাকার প্রতিবন্ধী উদ্যোক্তা তহবিল গঠন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি উন্নয়ন অধিদপ্তরকে কার্যকর করা, ইশারাভাষা ইনস্টিটিউট গঠন ও সব সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে দোভাষী নিশ্চিত করা, শিক্ষা ও চাকরির নিয়োগে শ্রুতিলেখক নীতিমালা প্রণয়ন, প্রতিবন্ধীদের প্রবেশগম্য অবকাঠামো ও গণপরিবহন নিশ্চিতে অর্থ বরাদ্দ এবং রাজনৈতিক দলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, মন্ত্রণালয়ভিত্তিক সংবেদনশীল বাজেট করা।