জাতীয় সংসদে উত্থাপিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের সংশোধনী বিল পাস হলে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা আরও খর্ব হবে বলে মনে করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনী বিলের বিষয়ে টিআইবি বলেছে, এটি হচ্ছে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’। প্রস্তাবিত সংশোধনী পাস হলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিকট নির্বাচনী আইনের লঙ্ঘনের কারণে যৌক্তিক বিবেচিত হলে যেকোনো নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচন বাতিলের যে ক্ষমতা বিদ্যমান আইনে রয়েছে, তা কেড়ে নেওয়া হবে বলে মনে করে টিআইবি। তাই সংশোধনী প্রস্তাবটি বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে তারা।
জাতীয় নির্বাচনসংক্রান্ত আইন বা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের সংশোধনী প্রস্তাব গত সোমবার (৫ জুন) জাতীয় সংসদে তোলা হয়।
এই প্রস্তাবের বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বিবৃতিতে বলেন, ‘গত বছর অক্টোবরে সিসিটিভি ক্যামেরায় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে অনিয়মের প্রমাণ পেয়ে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছিল কমিশন। কমিশনের এই পদক্ষেপ ক্ষমতাসীন দলের দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে মর্মে পর্যবেক্ষকদের অনেকের মধ্যে যে ধারণা সৃষ্টি হয়েছিল, এই সংশোধনী তার যথার্থতাই প্রতীয়মান করে।’
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সংশোধনীতে প্রস্তাবিত ‘ইলেকশন’ এর স্থলে ‘পোলিং’ উল্লেখ করা শুধু শব্দগত পরিবর্তন নয়, এর ব্যাপকতা আরও অনেক বেশি। এই বিল পাসের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করা হলে তা দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সম্ভাবনা সম্পর্কে আস্থাহীনতার সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই সংশোধনী নির্বাচন কমিশনের বিদ্যমান আইনগত সক্ষমতার যতটুকু রয়েছে, সেটিও নিজেদের স্বার্থে আরও গণ্ডিবদ্ধ করার উদ্যোগ ছাড়া কিছুই নয়। নির্বাচনী অনিয়ম রোধে কমিশনের ক্ষমতা এভাবে খর্ব করা অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক। শুধু তাই নয়, প্রস্তাবিত সংশোধনীতে ঋণখেলাপি ও বিলখেলাপিদের জন্য সুযোগ বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যমান আদেশে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সাত দিন আগে ব্যাংকঋণ ও বিভিন্ন পরিষেবার বিল পরিশোধের অনুলিপি জমা দেওয়ার বিধান থাকলেও, সংশোধনীতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগের দিন পর্যন্ত সে সুযোগ রাখা হয়েছে। এর ফলে ঋণখেলাপি ও বিলখেলাপিদের নির্বাচনে উৎসাহিত করা হচ্ছে—এমন ধারণা জোরালো হওয়া মোটেও অমূলক নয়।