চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে কি বেশিই এগিয়ে ম্যানচেস্টার সিটি?
পেপ গার্দিওলার দল নিয়ে ফুটবলপ্রেমীদের এমন ধারণা অমূলক নয়। এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে তারা যেভাবে উঠে এসেছে, সেটি বিচার করলে অবশ্যই ফেবারিট। বিশেষ করে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে রিয়াল মাদ্রিদকে সিটি যেভাবে নাস্তানাবুদ করেছে, তাতে বেশির ভাগেরই এমন দলের ওপর বাজি ধরার কথা। সিটির এ দলে আছেন কেভিন ডি ব্রুইনার মতো দারুণ চালিকা শক্তি। আছে আর্লিং হলান্ডের মতো গোল মেশিন, প্রথমবার সিটির জার্সি গায়ে তুলেই যিনি ইতিহাসে নাম লিখিয়েছেন। মৌসুমজুড়েই করেছেন গোলের পর গোল। চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে এমন দারুণ ছন্দের সিটির পক্ষে বাজি ধরার মানুষের অভাব নেই।
যাঁরা সিটির জয় নিয়ে প্রায় নিশ্চিত, তাঁদের একটু অপেক্ষা করতে বলছেন আরিগো সাচ্চি। এসি মিলান ও ইতালির সাবেক এই কিংবদন্তিতুল্য কোচ মনে করেন, তাঁদের নগর–প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব ইন্টারকে হেলাফেলা করার মতো বড় ভুল আর হতেই পারে না। ম্যানচেস্টার সিটিকে শক্তিশালী মেনে নিয়েই চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল সম্পর্কে তাঁর মূল্যায়ন, ‘ইস্তাম্বুলে গার্দিওলার দলকে যথেষ্ট ঘাম ঝরাতে হবে।’
ইতালির মিলানভিত্তিক ক্রীড়া দৈনিক লা গাজেত্তা দেল্লো স্তোর্তোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাচ্চি বলেছেন, ‘এভাবে দেখুন ব্যাপারটা। চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপাটা ম্যানচেস্টার সিটিকে লড়ে অর্জন করতে হবে। এটা সহজ কোনো বিষয় নয়। মাঠে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে প্রচুর ঘাম ঝরাতে হবে সিটির খেলোয়াড়দের। কারণটা পরিষ্কার, ইন্টার মিলান এমন একটা দল, যাদের সামর্থ্য আছে মাঠে যেকোনো দলের সবটুকু বের করে নিয়ে আসার, প্রতিপক্ষের জন্য সমস্যা হয়ে ওঠার।’
গার্দিওলার জন্যও বিরাট এক পরীক্ষা এই ফাইনাল। সাচ্চি মনে করেন, গার্দিওলার ভুল করার কোনো সুযোগ নেই, ‘আপনি যখন সিমোনে ইনজাঘির (ইন্টার মিলান কোচ) মতো দারুণ এক ট্যাকটিশিয়ানের বিপক্ষে সামান্য ভুল করবেন, সে সেটির সুযোগ নেবে খুব ভালোভাবে।’
‘চ্যাম্পিয়নস লিগ আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে’
ইন্টার মিলানেরও অস্ত্রের অভাব নেই। রোমেলু লুকাকু, লাওতারো মার্তিনেজ, এডেন জেকো, নিকোলো বারেল্লা, হোয়াকিন কোরেয়া—প্রতিপক্ষকে ছত্রখান করে দিতে পারেন যে কেউই। সাচ্চির আবার কোচ ইনজাঘির প্রতি আছে যথেষ্ট শ্রদ্ধা, ‘দলটা এ মুহূর্তে শারীরিক ও মানসিক দিক দিয়ে খুবই ভালো অবস্থায় আছে। এ জন্য কৃতিত্ব দিতে হবে ইনজাঘিকে। খুবই ভালো কোচ। ভালো মানুষ। তিনি দলকে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দলকে দারুণ দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
রিয়ালকে সরিয়ে ম্যানচেস্টার সিটি এখন সবচেয়ে দামি ফুটবল ব্র্যান্ড
সাচ্চিকে ফুটবল ইতিহাসে ‘মাস্টার ট্যাকটিশিয়ান’ বলা হয়। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত চার মৌসুম তিনি এসি মিলানের কোচ ছিলেন। ১৯৮৯ ও ১৯৯০ সালে পরপর দুইবার তিনি এসি মিলানকে জিতিয়েছেন ইউরোপিয়ান কাপ (এখনকার চ্যাম্পিয়নস লিগ)। ১৯৯৪ বিশ্বকাপে তিনি ইতালি জাতীয় দলের কোচ ছিলেন। সেবার ইতালি ব্রাজিলের বিপক্ষে টাইব্রেকারে হেরে রানার্সআপ হয়েছিল।