বার্সেলোনা ৩ : ২ ভলফ্সবুর্গ
বার্সেলোনার ছেলেদের চেয়ে মেয়েরাই এখন এগিয়ে—কথাটা তাহলে প্রতিষ্ঠিত সত্য!
ছেলেরা যেখানে ৪ বছর পর লা লিগা শিরোপা পুনরুদ্ধার করেছে, মেয়েরা সেখানে টানা ৪ বার জিতে লিগ ট্রফিটা প্রায় নিজেদের সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছে। রবার্ট লেভানডফস্কি–সের্হিও বুসকেতসদের মতো আলেক্সিয়া পুতেয়াস-আইতানা বোনমাতিরাও এ মৌসুমে স্প্যানিশ সুপার কাপে হয়েছেন চ্যাম্পিয়ন।
তবে ছেলেরা চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছে ৮ বছর আগে। আর মেয়েরা সর্বশেষ তিন মৌসুমেই জিতেছে দুবার, যার শেষটা আজ। সেটাও ঘুরে দাঁড়ানোর অবিশ্বাস্য এক গল্প লিখে!
নেদারল্যান্ডসের আইন্দহোফেনে ফাইনালে ভলফ্সবুর্গের বিপক্ষে দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও ৩–২ ব্যবধানে জিতেছে বার্সা। প্রথমার্ধে ইওয়া পাইওর ও আলেক্সান্দ্রা পোপের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল জার্মান ক্লাব ভলফ্সবুর্গ। দ্বিতীয়ার্ধে তিন গোল করে শিরোপা জিতে নেয় বার্সা।
মেয়েদের চ্যাম্পিয়নস লিগে এটি বার্সার দ্বিতীয় শিরোপা। এর আগে লা লিগা ও স্প্যানিশ সুপার কাপ জেতায় ‘ট্রেবল’ পূর্ণ হলো তাদের। সর্বশেষ ২০১৫ সালে লুইস এনরিকের অধীনে ট্রেবল জিতেছিল বার্সার ছেলেরা।
মেয়েদের আজকের সাফল্যে আরেকটি অনন্য কীর্তি গড়ে ফেলল বার্সা। প্রথম ক্লাব হিসেবে পুরুষ–নারী দুই চ্যাম্পিয়নস লিগই জিতল তারা।
বার্সার মেয়েরা ২০২১ সালে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর গত বছরও ফাইনালে উঠেছিল। কিন্তু ৩–১ ব্যবধানে হেরে যায় এই প্রতিযোগিতার সফলতম দল ফ্রান্সের অলিম্পিক লিওঁর কাছে।
জুভেন্টাস স্টেডিয়ামে গত ফাইনালে প্রথমার্ধেই ৩ গোল হজম করে বার্সা। সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। বিরতির পর অধিনায়ক আলেক্সিয়া পুতেয়াসের সান্ত্বনাসূচক গোলটা শুধু ব্যবধানই কমায়।
ফিলিপস স্টেডিয়ামে ভলফ্সবুর্গ বিরতির আগেই জোড়া গোল করলে আজও সেই শঙ্কা ভর করেছিল বার্সার ওপর। চোট থেকে পুরোপুরি সেরে উঠলেও ব্যালন ডি’ অর জয়ী পুতেয়াসকে নিয়ে ঝুঁকি নিতে চাননি কোচ জোনাতান হিরালদেজ। শুরুর একাদশে তো নয়ই; দুই গোল খাওয়ার পরেও পুতেয়াসকে না নামানোয় শঙ্কাটা আরও পেয়ে বসেছিল।
তবে বিরতির পর শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চের সব আলো কেড়ে নেন পাত্রিসিয়া গিহারো। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে দুই মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোল করে বার্সাকে ম্যাচে ফেরান এই মিডফিল্ডার।
গিহারোর গোল দুটি বার্সার মেয়েদের আত্মবিশ্বাসের পালে হাওয়া দেয়। জয়সূচক গোলের খোঁজে একের পর এক আক্রমণে ভলফ্সবুর্গকে ব্যতিব্যস্ত রাখে কাতালান ক্লাবটি। কাঙ্ক্ষিত গোলটা আসে ৭০ মিনিটে। মারিওনা কালদেনতির পাস থেকে বল পেয়ে ভলফ্সবর্গের জাল কাঁপান ফ্রিদোলিনা রোলফো। এগিয়ে যাওয়া গোলের পর রোলফোকে অভিনন্দন জানাতে বেঞ্চ থেকে ছুটে আসেন পুতেয়াস।
এমন এক স্মরণীয় ম্যাচে পুতেয়াস এক মিনিটও খেলবেন না, তা কি হয়? শেষ পর্যন্ত ৯০ মিনিটে বোনমাতির বদলি হিসেবে নামেন পুতেয়াস। কিছুক্ষণ পর রেফারি শেষ বাঁশি বাজালে ইউরোপসেরা হওয়ার গৌরবে মাতে বার্সা। ট্রফিটা পুতেয়াসের হাতে উঠতেই গৌরবজ্জ্বল দিনটা রূপ নেয় উৎসবে।