বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোকে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বেলারুশের বিরোধী নেতা ভ্যালেরি তিসেপকালোর দাবি, ৬৮ বছর বয়সী লুকাশেঙ্কোর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পরপরই তাঁকে ‘জরুরিভিত্তিতে’ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভ্যালেরি তিসেপকালো গত শনিবার টেলিগ্রাম পোস্টে এসব কথা জানান।
২০২০ সালে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লুকাশেঙ্কোর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ভ্যালেরি।
টেলিগ্রাম পোস্টে ভ্যালেরি লিখেছেন, প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, মস্কোর সেন্ট্রাল ক্রিনিক্যাল হাসপাতালে জরুরিভিত্তিতে ভর্তি করা হয়েছে লুকাশেঙ্কোকে। তাঁর শারীরিক অবস্থা সংকটজনক। লুকাশেঙ্কোর রক্ত পরিশোধন করা হয়েছে। পুতিনের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে বেরোনোর পর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে।
ভ্যালেরি আরও লেখেন, লুকাশেঙ্কোর শারীরিক অবস্থা একটাই সংকটজনক যে আপাতত তাঁকে অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়।
তবে এসব তথ্য প্রাথমিক সূত্র থেকে পাওয়া, যাচাই করার প্রয়োজন রয়েছে বলেও পোস্টে উল্লেখ করেছেন ভ্যালেরি। তাঁর এই পোস্ট টুইটারে শেয়ার করা হয়েছে।
বেলারুশ রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশ। ফলে রুশ ক্ষমতাসীনদের প্রভাব বেলারুশের ওপর সব সময়ই রয়েছে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত ছিল বেলারুশ। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বেলারুশ স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
১৯৯৪ সাল থেকে লুকাশেঙ্কো বেলারুশের ক্ষমতায় রয়েছেন। পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত তিনি। ইউক্রেন যুদ্ধে পুতিনকে সরাসরি সমর্থন দিয়েছেন তিনি।
লুকাশেঙ্কোর শারীরিক অবস্থা নিয়ে এমন খবর এটাই প্রথম নয়। চলতি মাসের শুরুতে বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজের আয়োজনে অংশ নিতে মস্কো গিয়েছিলেন লুকাশেঙ্কো।
পরে দ্রুত দেশে ফিরতে হয় তাঁকে। এমনকি পুতিনের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেননি তিনি।
রাশিয়া সফরের সময় প্রকাশিত ছবিতে লুকাশেঙ্কোকে বেশ ক্লান্ত দেখা গিয়েছিল। তাঁর ডান হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা ছিল। তবে লুকাশেঙ্কোর শারীরিক অবস্থা নিয়ে কোনো হালনাগাদ তথ্য জানায়নি বেলারুশ সরকার। কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানায়, অসুস্থতার কারণে লুকাশেঙ্কো রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেননি।
এ পটভূমিতে সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে একটি ভিডিও বার্তা দেন লুকাশেঙ্কো। অসুস্থতার খবর নাকচ করে তিনি বলেন, ‘আমি এখনই মারা যাচ্ছি না। আমার সঙ্গে থেকে আপনাদের আরও দীর্ঘ সময় ধরে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’
ওই সময় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছিল, লুকাশেঙ্কো ভাইরাসজনিত সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে তাঁর এবারের অসুস্থতার খবর নিয়ে লুকাশেঙ্কো, বেলারুশ সরকার বা রুশ প্রশাসন—কোনো পক্ষই মুখ খোলেনি।
উল্লেখ্য, গত মার্চ মাসে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রথমবারের মতো প্রতিবেশী ও মিত্রদেশ বেলারুশে কৌশলগত পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ঘোষণা দেন। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগু ও বেলারুশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভিক্টর খ্রেনিন চুক্তি সই করেন।