কক্সবাজার পৌরসভার সংরক্ষিত চারটি ওয়ার্ডে (সাধারণ ওয়ার্ড ১২টি) কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৬ জন নারী প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে ৫ জন রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। বাকিরা ‘পরিবারের ভাবমূর্তি’ কাজে লাগিয়ে জনপ্রতিনিধি হওয়ার আশায় ভোটের মাঠে নেমেছেন। আগামী ১২ জুন এ পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
হলফনামা ঘেঁটে দেখা গেছে, নারী প্রার্থীদের মধ্যে স্বশিক্ষিত সাতজন। তিনজন অষ্টম শ্রেণি পাস। উচ্চ মাধ্যমিক পাস চারজন। একজন আলিম পাস ও পৌরসভার বর্তমান কাউন্সিলর জাহেদা আক্তার বিএ বিএড ডিগ্রিধারী। পেশায় নয়জন গৃহিণী, ছয়জন ব্যবসায়ী এবং একজন ঠিকাদার। প্রার্থীদের মধ্যে দুজনের নামে বিভিন্ন অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।
সংরক্ষিত ১ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদের প্রার্থী দুজন। তার মধ্যে বর্তমান কাউন্সিলর শাহেনা আকতার উচ্চমাধ্যমিক পাস। পেশা ব্যবসা। তাঁর বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। নগদ টাকা আছে ৫০ হাজার। ব্যাংকে জমা আছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। স্বর্ণালংকার আছে ১০ ভরি। ব্যবসায় মূলধনের পরিমাণ ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার। এ ছাড়া রয়েছে সেমিপাকা বাড়ি একটি। তিনি কক্সবাজার পৌর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত ১২ কাউন্সিলর প্রার্থী
আরেক প্রার্থী ফাতেমা বেগম অষ্টম শ্রেণি পাস। পেশা গৃহিণী। তাঁর নগদ টাকা আছে ২ লাখ ১৫ হাজার। ব্যাংকে জমা ১ হাজার টাকা। স্বর্ণালংকার রয়েছে ১ লাখ টাকার।
সংরক্ষিত ২ নম্বর ওয়ার্ডে লড়ছেন ছয়জন। তাঁদের মধ্যে, পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর চম্পা উদ্দিন উচ্চমাধ্যমিক পাস। পেশা ব্যবসা। কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনসহ বিভিন্ন অপরাধের মামলা আছে তিনটি। একটি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। ব্যবসায় তাঁর আয় ২ লাখ টাকা। মূলধন ৪৯ লাখ ১৮ হাজার ৭৫০ টাকা। নগদ টাকা ২০ হাজার। ব্যাংকে জমা ৩ লাখ টাকা। স্বর্ণালংকার আছে ৭ ভরি। ১ দশমিক ৬০ একর অকৃষি জমি ও একটি দালান বাড়ি রয়েছে। তবে বেসিক ব্যাংক লিমিটেডে তাঁর ঋণের পরিমাণ ৮০ লাখ টাকা।
এই ওয়ার্ডের আরেক প্রার্থী রোকেয়া আকতার কেয়া উচ্চমাধ্যমিক পাস। পেশা ঠিকাদারি। তাঁর আয় ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। নগদ টাকার পরিমাণ ২ লাখ। অষ্টম শ্রেণি পাস সাবেকুন্নাহারের পেশা গৃহিণী। বাড়িভাড়া থেকে পান ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। নগদ টাকার পরিমাণ ৩০ হাজার। ব্যাংকে জমা আছে ৫ লাখ টাকা। স্বর্ণালংকার ৫ ভরি। পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর হেলেনাজ তাহেরা স্বশিক্ষিত। পেশায় উদ্যোক্তা ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। আয় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ব্যাংকে জমা আছে ৩৬ হাজার ৪০০ টাকা। স্বর্ণালংকার আছে ১৫ ভরি। ব্যবসায় পুঁজি ৬ লাখ টাকা। কৃষিজমির পরিমাণ ৪৫ শতক।
সংরক্ষিত ২ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ইয়াছমিন আকতার স্বশিক্ষিত। পেশা গৃহিণী। বাড়িভাড়া থেকে পান ৩ লাখ টাকা। সম্মানী ভাতা পান ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। নগদের পরিমাণ ১ লাখ টাকা। ব্যাংকে জমা ৫ লাখ ৪১ হাজার ৮৪১ টাকা। সঞ্চয়পত্র আমানত ১ লাখ ৪ হাজার ৫৩০ টাকা। এ ছাড়া সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা ও ১০০ গ্রাম স্বর্ণালংকার রয়েছে।
স্বশিক্ষিত জেসমিন আকতারের পেশা গৃহিণী। তাঁর নগদ টাকার পরিমাণ ১ হাজার ১০০ টাকা। স্বর্ণালংকার আছে ৫ ভরি।
মামলায় সাবেক মেয়র সরওয়ার, সম্পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মাসেদুল এগিয়ে
সংরক্ষিত ৩ নম্বর ওয়ার্ডেও লড়ছেন ছয়জন। তাঁদের মধ্যে জাহেদা আক্তার পেশায় গৃহিণী। তিনি জেলা মহিলা দলের দপ্তর সম্পাদক। বাড়িভাড়া থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। কাউন্সিলর হিসেবে পৌরসভা থেকে সম্মানী ভাতা পান ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। নগদ টাকার পরিমাণ ৭ লাখ ৬০ হাজার। ব্যাংকে জমা আছে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৫৫৯ টাকা। স্বর্ণালংকার আছে ৫ ভরি। অকৃষি জমির পরিমাণ ৭ শতক। এ ছাড়া রয়েছে একটি পাকা দালান।
অষ্টম শ্রেণি পাস সুমা দাশের পেশা গৃহিণী। তাঁর নগদ আছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৫০ টাকা। ব্যাংকে জমা আছে ১০ হাজার ৯৫০ টাকা। স্বশিক্ষিত মমতাজ বেগমের পেশা ব্যবসা। তাঁর আয় ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। নগদ টাকা আছে ৫ লাখ। স্বর্ণালংকার আছে ৫ ভরি। স্বশিক্ষিত রোমেনা আফাজের পেশা ব্যবসা। আয় ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। নগদ টাকা আছে ২ লাখ। স্বর্ণালংকার ২৫ ভরি। ব্যবসার মূলধন ১৭ লাখ ১০ হাজার টাকা।
স্বশিক্ষিত ছালেহা আকতারের পেশা গৃহিণী। বাড়িভাড়া পান ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। নগদ টাকার পরিমাণ ১৫ লাখ। ব্যাংকে জমা ২৩ হাজার ৫ টাকা। স্বর্ণালংকার আছে ১০ ভরি। রয়েছে তিনতলা একটি দালান। তবে ইউনাইটেড ফাইন্যান্স লিমিটেড কক্সবাজার ব্যাংকে তাঁর ঋণ আছে ২০ লাখ টাকার। স্বশিক্ষিত শাহীনা আকতার শাহীনের পেশাও গৃহিণী। আয় ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। নগদ টাকার পরিমাণ ৫০ হাজার। ব্যাংকে জমা ৭ লাখ টাকা। এ ছাড়া ২০ ভরি স্বর্ণালংকার ও একটি বাড়ি রয়েছে।
সংরক্ষিত ৪ নম্বর ওয়ার্ডে লড়ছেন দুজন। সাবেক কাউন্সিলর কোহিনুর ইসলাম উচ্চমাধ্যমিক পাস। পেশা গৃহিণী। তাঁর আয় ৪ লাখ টাকা। নগদ টাকা আছে ১ লাখ, ব্যাংকে জমা ১০ লাখ টাকা। স্বর্ণালংকার আছে ১০ ভরি। এ ছাড়া বাড়ি আছে একটি।
বর্তমান কাউন্সিলর নাছিমা আকতারের লেখাপড়া আলিম পাস। পেশা ব্যবসা। তিনি জেলা মহিলা দলের সভাপতি। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, মাদকসহ বিভিন্ন আইনে চারটি মামলা বিচারাধীন। একটি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। ব্যবসা থেকে আয় ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা। কাউন্সিল হিসেবে পৌরসভার সম্মানী ভাতা পান ১ লাখ ২০ হাজার টাকা।