ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের ‘ডামি প্রার্থী’ থেকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নারী মেয়র। গৃহিণী জায়েদা খাতুনের জন্য দীর্ঘ এই পথটা পাড়ি দেওয়া মোটেই সহজ ছিল না। কিন্তু ছায়ার মতো মায়ের পাশে থেকে জটিল সমীকরণটাই যেন সহজ করে তুলেছেন জাহাঙ্গীর আলম। আর তাতে আওয়ামী লীগের মনোনীত নোকা মার্কার প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটে হারিয়ে শেষ হাসি হেসেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা জায়েদা খাতুন।
এমন দিনেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি গাজীপুরের নতুন নগরমাতা। বরং মা-ছেলের সম্মিলিত এই জয়কে আওয়ামী লীগ সভাপতিকেই উৎসর্গ করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রাতে ফলাফল ঘোষণার সময় গাজীপুরের ছয়দানা এলাকার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন জায়েদা খাতুন। ছেলে জাহাঙ্গীর আলম ছিলেন বঙ্গতাজ মিলনায়তনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে। গভীর রাতে জাহাঙ্গীর বাড়ি ফিরলে দেখা মেলে গাজীপুরের নতুন মেয়রের।
এ সময় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জায়েদা খাতুন বলেন, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে। আমি খুব খুশি। এ জয় আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও গাজীপুরের সকল জনগণকে উপহার দিলাম।
জায়েদা খতুন আরও বলেন, গাজীপুরের সর্বস্তরের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমার ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করতে চাই। এজন্য সকলের সহযোগিতা দরকার।
বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তি করে ২০২১ সালে মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত হন জাহাঙ্গীর আলম। এরপর আওয়ামী লীগ থেকেও বহিষ্কার হন। চলতি বছরেই সাধারণ ক্ষমায় দলে ফেরেন। গাজীপুর সিটি নির্বাচনে চেয়েছিলেন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নও। তবে মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার হন। ওদিকে ঋণখেলাপির কারণে তার প্রার্থিতাও বাতিল হয়।
জাহাঙ্গীর নিজেও হয়তো এমন আশঙ্কা করেছিলেন। এজন্য মা জায়েদা খাতুনকেও প্রার্থী করেন তিনি। জাহাঙ্গীরের সেই ছায়া প্রার্থীই আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে হারিয়ে দিলেন।
বৃহস্পতিবার রাত দেড়টায় ঘোষিত বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী, ৪৮০ ভোটকেন্দ্র মিলিয়ে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়েছেন। নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট। দু’জনের ভোটের পার্থক্য ১৬ হাজার ১৯৭।