প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরে ভূপৃষ্ঠে পাঁচ হাজারের বেশি নতুন প্রজাতির জীবের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ‘কারেন্ট বায়োলজি’ জার্নালে প্রকাশিত এক জরিপে বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন, প্রশান্ত মহাসাগরের গভীর ভূপৃষ্ঠে পাঁচ হাজার ৫৭৮ প্রজাতির জীবের সন্ধান মিলেছে, যেগুলোর ৮৮ থেকে ৯২ শতাংশের জীবন সম্পর্কে এর আগে বিজ্ঞানীদের ধারণাও ছিল না। খবর: দ্য গার্ডিয়ান’র।
মহাসাগরটির হাওয়াই ও মেক্সিকো অঞ্চলের ১৭ লাখ বর্গমাইলের এলাকাটিকে ক্ল্যারিয়ন-ক্লিপারটন জোন (সিসিজেড) বলা হয়। খনিজসম্পদে ভরপুর এলাকাটিতে নজর পড়েছে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর। এখানে কোবাল্ট, ম্যাঙ্গানিজ, নিকেল পাওয়া যাওয়ার কথা জানা গেছে। এই সিসিজেডে এত জীবের আবাস রয়েছে, তা বিজ্ঞানীদের জানা ছিল না।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও চীনের ১৭টি কন্ট্রাক্টর এরই মধ্যে সাত লাখ ৪৫ হাজার বর্গমাইলে খনিজ সম্পদ আহরণের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছে। আগামী জুলাইয়ে কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে খনি খননের আবেদন জমা নেবে ইন্টারন্যাশনাল সি-বেড অথরিটি।
গভীর সমুদ্রে খনি খননের ফলে জীববৈচিত্রের ক্ষতির মাত্রাটা কেমন হবে তা জানতে জরিপ চালান বিজ্ঞানীরা। চার থেকে ছয় হাজার মিটার সমুদ্রতলে রিমোট-কন্ট্রোলড যান পাঠিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণাটি চালিয়েছেন। এসময় সমুদ্রের উপরে তারা নৌকায় করে ভিডিওতে নিচের চিত্র দেখেছেন।
গবেষণাকাজটির প্রধান ও ন্যাচারাল হিস্টরি মিউজিয়ামের (এনএইচএম) পরিবেশবিজ্ঞানী মুরিয়েল র্যাবোন বলেন, ‘দারুণ এই বৈচিত্রময় আমরা পৃথিবীতে সবাই মিলে আছি, এদের জীবন বোঝার এবং এদের সুরক্ষায় আমাদের দায়িত্ব রয়েছে।’
সমুদ্রতলের ভূপৃষ্ঠকে ‘দারুণ জায়গা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন অপর বিজ্ঞানী ড. আড্রিয়ান গ্লোভার। তিনি বলেন, ‘কঠিন ঠান্ডা ও অন্ধকার সত্তেও সেখানে জীবন টিকে আছে। এটি বিস্ময়কার।’ বিজ্ঞানী আরও বলেন, ‘ভাল হয়েছে যে, আমরা খনি খননের আগে ব্যবস্থা নিতে পারব।’