নাভিন উল হক কারও নাম নেননি। স্রেফ একটা ভিডিও দিয়েছেন। যে ভিডিওতে তিনি নিজে বা খেলার জগতের কেউ নেই। ক্রিকেটের সঙ্গে আপাত অপ্রাসঙ্গিক এই ভিডিওই ঝড় তুলেছে বিরাট কোহলির ভক্ত-সমর্থকদের মধ্যে।
কোহলিকে ‘অপমানে’র দায়ে তারা উত্তাপ ছড়াচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। কেউ বলছেন নাভিন ‘ঔদ্ধত্য’ দেখিয়েছেন। এর কারণে তাঁকে আইপিএল থেকে বের করে দেওয়ার দাবিও তুলেছেন কেউ কেউ।
নাভিন অবশ্য চুপ, চুপ কোহলিও। তবে ভারতীয় ক্রিকেট তারকার সঙ্গে আফগান পেসারের সাম্প্রতিক বাদানুবাদই যে এর মূলে, তা সহজেই বোধগম্য।
আইপিএলে যারা নজর রেখেছেন, কোহলি-নাভিনের বাদানুবাদের কথা তাদের জানা। এ মাসের শুরুর দিকে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু-লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস ম্যাচে তর্ক বেঁধে গিয়েছিল কোহলি-নাভিনের। সেদিন কোহলি জুতো দেখিয়েছিলেন নাভিনকে। যার জেরে শেষ দিকে হয় তর্কাতর্কি। একানা স্টেডিয়ামের ম্যাচটিতে কোহলির সঙ্গে ঝামেলা বেঁধেছিল লক্ষ্ণৌর পরামর্শক গৌতম গম্ভীরেরও। ম্যাচ শেষে কোহলি ও গম্ভীরকে ম্যাচ ফির শতভাগ আর নাভিনকে পঞ্চাশ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছিল। এ নিয়ে ভারতের ক্রিকেট অঙ্গন বেশ কয়েক দিন উত্তপ্ত ছিল। মাঠে খেলোয়াড়দের ভদ্রোচিত আচরণের আহ্বান জানান কয়েকজন সাবেক ক্রিকেটার ও বিশ্লেষক।
তবে দর্শক মহলে সেই ঘটনার রেশ এখনো রয়ে গেছে। ১ মের ম্যাচটির পর লক্ষ্ণৌ পেসার নাভিন যেখানেই খেলতে গেছেন, গ্যালারি থেকে ‘কোহলি, কোহলি’ চিৎকারে দুয়ো শুনেছেন। লিগ পর্বে লক্ষ্ণৌর সর্বশেষ ম্যাচ ছিল শনিবার কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে। ইডেন গার্ডেনে হওয়া ম্যাচটিতে নাভিন বল হাতে নিতেই দর্শকেরা ‘কোহলি, কোহলি’ আওয়াজ তোলে। মাথা ঠান্ডা রেখে মনোযোগ দিয়ে খেলতে চাইলেও নাভিন যে তা পারেননি, সেটা তাঁর শরীরী ভাষা আর খেলাতেই বোঝা গেছে। ৪ ওভারে রানও দেন ৪৬।
গেইলের সেঞ্চুরির রেকর্ড এখন কোহলির
ভেতরে জমে থাকা সেই ক্ষোভই হয়তো পরদিনই মেটাতে চেয়েছেন নাভিন। রোববার লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে গুজরাট টাইটানসের কাছে হেরে আইপিএল শেষ হয়ে গেছে বেঙ্গালুরুর। টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেও কোহলিকে বিদায় নিতে হয়েছে প্লে-অফের আগেই।
গুজরাটের কাছে বেঙ্গালুরুর হারের কিছুক্ষণ পরই ইনস্টাগ্রামে একটি ‘মিম’ ভিডিও পোস্ট করেন নাভিন। ভিডিওতে দেখা যায়, স্টুডিওতে বসে এক উপস্থাপক কিছু একটা বলে হাত তালি দিতে অট্টহাসিতে ফেটে পড়েন। যা মূলত উপহাসেরই হাসি।
কোহলি ভক্তদের অভিযোগ, নাভিনের ভিডিওটি বেঙ্গালুরু ওপেনারকে উদ্দেশ করে দেওয়া। এ নিয়ে তাই টুইটারে সরব হয়েছেন অনেকে। দিয়ারমান নামের একটি ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট থেকে বলা হয়, ‘বিরাট কোহলি মাঠে যা করেছিলেন, সে ঘটনায় আমি নাভিনকে সমর্থন করেছিলাম। কিন্তু ব্যাপারটাকে নাভিন এখন টেনে লম্বা করছেন। যথেষ্ট হয়েছে, এবার থামা উচিত।’
আদরিশ সেনগুপ্ত নামের একজন লিখেছেন, ‘আইপিএল এবং লক্ষ্ণৌর জন্য নাভিন উল হকের মতো খেলোয়াড়কে শাস্তি দেওয়ার এটাই সেরা সময়। মাঠ এবং মাঠের বাইরের খেলোয়াড়সুলভ আচরণ এবং সত্যিকারের স্পিরিট ও আবেগকে আহত করা খেলোয়াড়দের নিষিদ্ধ করুন। এটা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। আগ্রাসী ভাব দেখানো আর অসম্মান করার মধ্যে পার্থক্য আছে।’ অনেকে অভিশাপের সুরে বলেছেন, প্লে-অফে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের সামনে উড়ে যাবেন লক্ষ্ণৌর নাভিন।