শরীয়তপুরে বাস চলাচল বন্ধ, ঢাকায় যেতে ভোগান্তি

0
118
শ্রমিক সংগঠনের সাধারণ সভার কারণে শরীয়তপুরে বাস চলাচল বন্ধ। সোমবার সকালে শহরের পৌর বাস টার্মিনালে

শরীয়তপুর থেকে ঢাকাসহ আটটি রুটে আজ সোমবার সকাল ছয়টা থেকে বাস চলাচল বন্ধ আছে। বেলা দুইটা পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ থাকবে। শরীয়তপুর আন্তজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রিবার্ষিক সাধারণ সভা উপলক্ষে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। বাস চলাচল না করায় শরীয়তপুর থেকে ঢাকাগামী যাত্রীরা পড়েছেন চরম বিপাকে।

সকাল থেকে যাত্রীরা বিকল্পভাবে ঢাকার পথে রওনা হয়েছেন। যাত্রীরা সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজার কাছে যাচ্ছেন। সেখান থেকে বাসে করে ঢাকায় যাচ্ছেন।

শরীয়তপুর আন্তজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শরীয়তপুর জেলা থেকে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ঢাকার যাত্রাবাড়ী, কেরানীগঞ্জের কদমতলায় বাস চলাচল করে। এ ছাড়া ফরিদপুর, মাদারীপুর ও যশোরের বেনাপোলে বাস চলাচল করে। জেলা শহর থেকে পাঁচটি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বাস চলাচল করে। সব কটি রুটে বিভিন্ন কোম্পানির অন্তত ৪৫০টি বাস চলাচল করে।

শরীয়তপুর আন্তজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নিবন্ধিত শ্রমিক আছেন ১ হাজার ৫৩৮ জন। তাঁরা বিভিন্ন রুটে চলাচল করা বাসে কর্মরত। তাঁদের নিয়ে আজ সকাল ১০টার দিকে ত্রিবার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে পৌর বাস টার্মিনালে। এ কারণে বেলা দুইটা পর্যন্ত সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রমিকদের সংগঠনটি। তবে সরকারি পরিষেবার বাস সার্ভিস বিআরটিসির বাস এর আওতাভুক্ত নয়। শরীয়তপুরে ১৫ থেকে ২০টি বিআরটিসির বাস ঢাকার পথে চলাচল করে।

সদর উপজেলার সুবচিনী এলাকার সাহাদাৎ হোসেন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার জন্য সকাল সাতটার দিকে পৌর বাস টার্মিনালে আসেন। বাস না পেয়ে তিনি একটি অটোরিকশায় করে পদ্মা সেতুর টোল প্লাজায় রওনা হন। তিনি বলেন, পৌর বাস টার্মিনাল থেকে বাসে চড়লে দুই ঘণ্টায় ঢাকায় পৌঁছানো যায়। ঢাকায় গিয়ে অফিস করার কথা তাঁর। বাস না পেয়ে অটোরিকশায় করে টোল প্লাজার কাছে গিয়ে অন্য রুটের বাসে ঢাকায় যেতে হবে। তাতে কত সময় লাগবে, তিনি বুঝতে পারছেন না।

গোসাইরহাট উপজেলা সদরের ব্যবসায়ী সোহাগ সরদার দোকানের মালামাল কিনতে ঢাকায় যাওয়ার জন্য সকাল আটটার দিকে পৌর বাস টার্মিনালে এসে বাস পাননি। পরে তিনি ঢাকায় না গিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। তিনি বলেন, ‘সকালে ঢাকায় রওনা হলে দুই ঘণ্টায় পৌঁছানো যায়। মালামাল কিনে তা ট্রান্সপোর্টে দিয়ে দিন দিনেই আবার ফিরে আসা যায়। কিন্তু আজ বাস বন্ধ তা জানতাম না। বাস বন্ধ থাকার বিষয়টি জানা থাকলে ৩০ কিলোমিটার দূর থেকে শরীয়তপুর বাস টার্মিনালে আসতাম না। আজ আর ঢাকায় যাব না। বাড়ি ফিরে যাচ্ছি, দুই-তিন দিন পরে যাব।’

শরীয়তপুর আন্তজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক আহম্মেদ চৌকিদার বলেন, তিন বছর পরপর তাঁদের সংগঠনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। শিগগিরই ওই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। শ্রমিকদের নিয়ে সাধারণ সভা করে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা ও নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করা হবে। বাস চলাচল বন্ধ রাখার বিষয়টি শ্রমিক সংগঠন থেকে স্থানীয় প্রশাসন, বিআরটিএ, বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানি ও শরীয়তপুর জেলা সড়ক পরিবহন মালিকপক্ষকে জানানো হয়েছে।

শরীয়তপুর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি ফারুক আহম্মেদ তালুকদার বলেন, শ্রমিকদের সাধারণ সভার কারণে বাস চলাচল বন্ধ আছে। তাতে কিছু ভোগান্তি হচ্ছে। মালিকপক্ষের কাছে অন্য কোনো বিকল্প ছিল না বলে তিনি উল্লেখ করেন।

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান বলেন, ‘যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে কিছু বাস চালু রাখার অনুরোধ করা হয়েছে শ্রমিক ইউনিয়নকে। আমরা বিষয়টির ওপর নজর রাখছি। যাত্রীরা বিকল্পভাবে গন্তব্যে যেতে না পারলে আমরা বাস চলাচলের বিষয়ে পদক্ষেপ নেব।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.