জাপানের হিরোশিমায় শুক্রবার বসেছে জি-৭ সম্মেলন। তিনদিনের এই সম্মেলেন চলবে রোববার পর্যন্ত। বিশ্বের সাত ধনী রাষ্ট্রের শীর্ষ নেতারা বার্ষিক এ বৈঠকে মিলিত হন। জাপান এই সম্মেলনের আয়োজক। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা জোটের নেতাদের স্বাগত জানান।
বৈঠকের আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরমাণু বোমা হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান নেতারা। তারা পিস পার্ক মেমোরিয়াল পরিদর্শন এবং পুষ্পস্তবক অর্পণ। এই যুদ্ধে ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ মানুষ মারা গিয়েছিল। খবর-বিবিসি ও জাপান টাইমস।
রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রেক্ষিতে এই সম্মেলনে এজেন্ডার শীর্ষে রয়েছে ইউক্রেন ইস্যু। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই সম্মেলনে বক্তব্য দিতে পারেন বলে গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কাউন্সিলের সচিব ওলেক্সি ড্যানিলভের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেলেনস্কি এই সম্মেলেনে যোগ দেওয়ার জন্য জাপানে যাবেন। তিনি বলেন, খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তাই আমাদের স্বার্থরক্ষার জন্য সেখানে প্রেসিডেন্টের উপস্থিতি অপরিহার্য।
এই সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ অন্য নেতারা রাশিয়া ও চীনের বিরুদ্ধে ঐক্যফ্রন্ট গঠনের চেষ্টা করবেন। জি-সেভেন সদস্য দেশগুলো হলো- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও জাপান।
এদিকে চীনের সঙ্গেও উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ অবস্থায় জোটের নেতারা ‘মুক্ত’ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিশ্চিত করার উপর জোর দিচ্ছেন।
এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য এবং পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ ইস্যুগুলোও সম্মেলনের আলোচ্য বিষয়।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা পরিবারের বসবাস এই হিরোশিমা শহরেই। তিনি আশা করছেন, এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতি জাপানের অঙ্গীকারের প্রকাশ ঘটবে। পারমাণবিক অস্ত্রবিহীন পৃথিবীর ধারণা বাস্তবায়নের পথে গতি সঞ্চার হবে। পারমাণবিক ধ্বংসস্তূপের শহরটিতে শান্তিস্তম্ভ নির্মাণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
জাপান এ বছরই জার্মানির কাছ থেকে জি-৭ জোটের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করে। জোটের সদস্য না হলেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই সম্মেলনে সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দেয়। অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারতের প্রতিনিধিদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সম্মেলনে।
প্রসঙ্গত, এই গ্রুপের নাম ছিল জি-৮। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের পর রাশিয়াকে গ্রুপ থেকে বহিষ্কার করা হয়।