কয় দিন আগে ইংল্যান্ডে একটি অনুষ্ঠানে সাকিব আল হাসানকে প্রশ্নটা করা হয়েছিল। অক্টোবর-নভেম্বরে ভারতে অনুষ্ঠেয় ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাংলাদেশ দলে মাহমুদউল্লাহর জায়গা হবে তো? স্বাভাবিকভাবেই সাকিব সরাসরি উত্তর দেননি। তবে বলেছেন, ব্যাটিং অর্ডারের ৭ নম্বর জায়গা নিয়েই দলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রতিযোগিতাটা দেখা যাচ্ছে।
সাকিবের সে উত্তরের সূত্র ধরে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানকেও করা হলো একই প্রশ্ন। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজ ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনালের পুরস্কার বিতরণ করতে এসেছিলেন তিনি। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে বিশ্বকাপ দলের ৭ নম্বর জায়গা নিয়ে তাঁর ভাবনাটাও জানতে চাওয়া হয়—অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহকে তিনি বিশ্বকাপ দলে দেখছেন কি না?
এর আগে চেমসফোর্ডে নাজমুল হাসান মাহমুদউল্লাহর বিশ্বকাপ দলে থাকার পক্ষেই বলেছিলেন। কিন্তু আজ ওই প্রশ্নের উত্তরটা শুরু করলেন রসিকতা দিয়ে, ‘এখন ক্রিকেট নিয়ে সবচেয়ে বেশি সরব হচ্ছে মিডিয়া। এটাতে আমরা খুশি। আপনারা এত বেশি সম্পৃক্ত, এটা আমাদেরও সাহায্য করে। সোশ্যাল মিডিয়া নিয়েও আমরা খুশি, কিন্তু ওখানে মনে হয় অনেকের ক্রিকেট নিয়ে কোনো ধারণাই নেই, কিন্তু মন্তব্য করে যাচ্ছেন। আপনারা এখানে যাঁরা আছেন, এমন অনেকেই আছেন ক্রিকেট সম্পর্কে যাঁরা আমার চেয়ে বেশি জানেন। আমি চিন্তা করছি আপনাদের কাছে নাম চাইব, সেরা একাদশ তৈরি করে দেন। তারপর দেখি আপনারা কী বলেন। এটা হলে ভালো হয় না? জানতে তো পারলাম। আপনারা কী মনে করেন, কাকে খেলানো উচিত?’
এরপর দল নিয়ে নিজের মতামতও জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি, ‘তামিম, লিটন, শান্ত (নাজমুল), হৃদয় (তাওহিদ), মুশফিক, সাকিব—এই ছয়জনের মধ্যে কাউকে তো আপনারা বাদ দেবেন বলে মনে হয় না। ওপেনিংয়ে নাঈম শেখ ও বিজয় ভালো পারফর্ম করছে, তারাও আসতে পারে। কে আসবে আমি জানি না। আমি আমার পর্যবেক্ষণ বলছি। আমার ধারণা ওপেনিংয়ে বাড়তি একজনকে তারা (নির্বাচক কমিটি) নেবে। ইনজুরির জন্যও ব্যাকআপ লাগবে।’
পেস আক্রমণ নিয়ে বিসিবি সভাপতির ধারণা, বিশ্বকাপে তিন পেসারের দলই খেলবে, ‘আমার ধারণা তিনটা পেসার খেলবে…নিশ্চিত। সাকিব যদি খেলে একজন স্পিনার খেলবে। পাঁচটা বোলার ছাড়া তো বিশ্বকাপে খেলবেন না। হাসান আছে, তাসকিন, শরীফুল, ইবাদত, মোস্তাফিজ আছে। যে কেউ খেলতে পারে। চারজন পেসারও খেলতে পারে।’ পরে অবশ্য মেহেদী হাসান মিরাজের নাম উল্লেখ করে বলেছেন, ‘আমার মনে হয় না কেউ মিরাজকে বিশ্বকাপ স্কোয়াড থেকে বাদ দেওয়ার কথা বলবে।’
কে হতে পারে দলের ৭ নম্বর ব্যাটসম্যান, সে উত্তরও দিয়েছেন বোর্ডপ্রধান। এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ভালো খেলা আফিফ হোসেন ও মোসাদ্দেক হোসেনের নাম এসেছে তাঁর কথায়, ‘কোনো কারণে পাঁচ বোলার নিয়ে খেললে একজন বাড়তি ব্যাটসম্যান খেলানোর সুযোগ তৈরি হয়। ওখানে এখন স্কোয়াডে আছে রাব্বি (ইয়াসির)। স্কোয়াডে নেই কিন্তু যেকোনো সময় ঢুকতে পারে আফিফ, মাহমুদউল্লাহ, মোসাদ্দেক। যদি আমি পাঁচ বোলার নিয়ে খেলি কোনো কারণে একটা বোলার চোটে পড়লে বলটা করবে কে? এ জন্য অলরাউন্ডার পেলে ভালো হয়। আলটিমেটলি নান্নু (প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন) কী করবে আমি জানি না। আমি আমার কথা বলছি।’
দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে ফিল্ডিং সামর্থ্য বড় ভূমিকা রাখবে। সেদিক দিয়ে মাহমুদউল্লাহর চেয়ে আফিফ ও মোসাদ্দেককে এগিয়ে রাখছেন নাজমুল হাসান, ‘ব্যাটিংয়ের দিক থেকে আফিফ, মাহমুদউল্লাহ দুজনই থাকতে পারে। রাব্বি চোট থেকে ফিরে আসার পর তেমন কোনো পারফরম করেনি। বোলিংয়ের কথা ভাবলে এগিয়ে থাকবে আফিফ, মোসাদ্দেক। মাহমুদউল্লাহও হতে পারে। তবে ফিল্ডিংও যদি চান তাহলে আমার মনে হয় আফিফ ওদের ওপরে। মোসাদ্দেকও রিয়াদের (মাহমুদউল্লাহ) চেয়ে ভালো হতে পারে।’
বিসিবি নারী দলের ম্যানেজারের পদ থেকে জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার মনজুরুল ইসলামকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তও জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি। তিনি এখন শুধু নারী দলের নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করবেন।