পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সুপ্রিম কোর্টকে রক্ষায় তার সমর্থকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। সোমবার তিনি অভিযোগ করে বলেন, নিরাপত্তা সংস্থাগুলো ফেডারেল সরকারের ‘গুন্ডাদের’ আদালত দখল নিতে এবং সংবিধানকে বিকৃত করতে সহায়তা করছে।
এক টুইট বার্তায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সব নাগরিক শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকুন। কারণ সুপ্রিম কোর্ট এবং সংবিধান একবার ধ্বংস হলে পাকিস্তানের স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে।’
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান বলেন, তাকে গ্রেপ্তারের পর যে সহিংসতা হয়েছিলো তাতে কোন তদন্ত ছাড়াই প্রায় সাত হাজার পিটিআই কর্মীকে জেলে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেক নারীও ছিলো।
তিনি বলেন, সরকার আসলে পাকিস্তানের বৃহত্তম এবং একমাত্র ফেডারেল পার্টিকে নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করছে।
গতকাল সোমবার পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের চেয়ারম্যান ইমরান খান ক্ষমতাসীন জোটের বিরুদ্ধে তাকে গ্রেপ্তার করার পেছনে হাত রয়েছে বলে আবার অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, তাকে গ্রেপ্তারের ঘটনা লন্ডনের পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটেছে।তারা লন্ডনি পরিকল্পনার অধীনে আমাকে আগামী ১০ বছরের জন্য কারাগারে রাখতে রাষ্ট্রদ্রোহ আইন ব্যবহার করতে চাইছে।
তিনি অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন সরকার তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে কারাগারে রেখে তাকে অপমান করার পরিকল্পনাও করেছে।
১১ মে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় ইমরান খানের গ্রেপ্তার ‘বেআইনি’ ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়ালের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে ক্ষমতাসীন পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম)। এ ঘটনায় পিডিএমকে আক্রমণ করে কয়েকটি টুইট করেছেন ইমরান। তিনি বলেছেন, ‘আমি কারাগারে থাকাকালীন সহিংসতার অজুহাত দিয়ে তারা বিচারক, জুরি এবং ফাঁসিদাতার ভূমিকা গ্রহণ করেছে।’
ক্ষমতাসীন পিডিএমের অভিযোগ, ইমরান খানকে অযাচিত সুবিধা দিয়েছে বিচার বিভাগ। এ কারণে তারা প্রধান বিচারপতি বান্দিয়ালের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের বাইরে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
গত শুক্রবার আটটি মামলায় ইমরান খানকে জামিন দেন আদালত। তবে ইমরানের আশঙ্কা, তাকে গ্রেপ্তারে অন্য মামলাগুলো সামনে আনতে পারে সরকার। ইমরান খান বলেন, সুপ্রিম কোর্টের বাইরে নাটক করা হচ্ছে, যাতে প্রধান বিচারপতি সংবিধান অনুযায়ী রায় দিতে না পারেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, বর্তমান জোট সরকার আবার দেশে ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ইমরান খানকে আগামী ১৭ মে পর্যন্ত কোনো মামলায় গ্রেপ্তার করা যাবে না বলে জানিয়েছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। গত শুক্রবার হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ পিটিআই চেয়ারম্যান ও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় ২ সপ্তাহের জামিনের নির্দেশে এ কথা জানায়।