চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় ফিলিং স্টেশনগুলোতে গ্যাস নেই। এ কারণে আজ সোমবার সকাল থেকে রাস্তায় গ্যাসচালিত যানবাহনের সংখ্যা কম ছিল। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় অফিসগামী যাত্রীদের।
সকালে চট্টগ্রাম নগরের ২ নম্বর গেট, হালিশহর, আগ্রাবাদ, এ কে খান মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, অফিসগামী মানুষের জটলা। গ্যাসচালিত ছোট যানবাহন তেমন একটা চোখে পড়েনি। একটা বাস কিংবা অটোরিকশা এলেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন যাত্রীরা। কেউ কেউ বাসের দরজায় ঝুলে গন্তব্যে গেছেন। আবার কেউ বাড়তি ভাড়ায় দূরের পথও রিকশায় গেছেন।
রাস্তায় কিছুসংখ্যক সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলেছে। তবে গ্যাসের বদলে অকটেনে চলার অজুহাতে বাড়তি ভাড়া দাবি করেন এসব অটোরিকশার চালকেরা।
মোহাম্মদ আবদুল হালিম একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক। তাঁর বাসা ২ নম্বর গেটের আলফালাহ গলি এলাকায়। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অবস্থান আগ্রাবাদ এলাকায়। গুগল ম্যাপের তথ্য অনুযায়ী, এ পথের দূরত্ব ৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার। মোহাম্মদ আবদুল হালিম বলেন, এই দূরত্বের সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া সাধারত ১০০ থেকে ১২০ টাকা। কিন্তু তিনি ১৬০ টাকা ভাড়া দিয়ে কর্মস্থলে গেছেন। বাসে ভিড় এবং অটোরিকশা কম থাকায় তাঁকে বাধ্য হয়ে এ ভাড়ায় গন্তব্যে যেতে হয়।
মোহাম্মদ মহিউদ্দিন নামের এক সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক বলেন, ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার গ্যাস নিলে সারা দিন চলে যায়। অকটেন কিংবা পেট্রলে চালালে খরচ বেশি পড়ে। এ জন্য বাড়তি ভাড়া নিতে হয়। যাত্রীদের সঙ্গে তর্কও করতে হয়। এ জন্য গত দুই দিন গাড়ি নিয়ে বের হননি। আর আজ এলপিজি গ্যাস নিতে প্রবর্তকের ফয়েজ আহমদ অ্যান্ড সন্স ফিলিং স্টেশনে গেছেন। ৫৫ টাকা লিটার দরে গ্যাস নিয়েছেন।
গত শুক্রবার রাত ১১টায় আগাম সতর্কতায় তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করা হয়। ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে এ সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। মহেশখালীতে থাকা ভাসমান দুটি টার্মিনাল গভীর সমুদ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়। দুটি টার্মিনালের মাধ্যমে আমদানি করে আনা এলএনজি রূপান্তর করে পাইপলাইনে সরবরাহ করা হয়। সেখান থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ গতকাল পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। এ কারণে বাসাবাড়িতে কেউ লাকড়ির চুলা, কেউ বিদ্যুৎ–চালিত চুলায় রান্না সেরেছেন। আবার অনেকে রেস্তোরাঁ থেকে খাবার কিনে খেয়েছেন। আজও একই প্রক্রিয়ায় রান্না বা খাবার কিনতে হচ্ছে বলে জানা গেছে।
মোমেনবাগ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ রেজওয়ান আজ দুপুরে মুঠোফোনে বলেন, গ্যাস না থাকায় গতকাল পাশের রেস্তোরাঁ থেকে খাবার এনে খেয়েছেন। আজও সকালের নাশতা কিনে এনেছেন। আর দুপুরের খাবার কেরোসিন তেলের চুলাতে রান্না করছেন।