কর্ণাটকে চ্যালেঞ্জে বিজেপি

0
176
ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকের বিধানসভা নির্বাচনে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। রাজ্যটিতে বুধবার ভোট হবে। ফল প্রকাশ হবে ১৩ মে। নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে ব্যাপক প্রচারণায় নেমেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে কংগ্রেসের প্রচারণায় হাতিয়ার ছিল বিধানসভার নেতৃত্বে থাকা বিজেপি নেতাদের অনিয়ম-দুর্নীতির ফিরিস্তি। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নির্বাচনে বিজেপি স্থানীয় সরকারের কার্যক্রম তুলে ধরার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেশ পরিচালনাকেই বেশি তুলে ধরেছেন। কারণ, বিধানসভার নেতৃত্বে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের কার্যক্রম খুব একটা ভোট টানতে পারবে না।

নির্বাচনে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী পদে প্রার্থী করেছে তিনবারের নির্বাচিত ও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী বাসভরাজ সোমাপ্পা বোম্মাইকে। অন্যদিকে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও বর্তমান বিরোধী দলীয় নেতা সিদ্দারামাইয়া।

কর্ণাটকে বিজেপির ক্ষমতা ধরে রাখতে গত ১০ দিনে ১৭টি জনসভা এবং ৫টি শোভাযাত্রায় ভাষণ দিয়ে প্রচারণার নেতৃত্বে ছিলেন মোদি। নির্বাচনী প্রচারণার জন্য ওই রাজ্যে তিনি দুটি রাতও কাটিয়েছেন। এটিকে অস্বাভাবিক বলা হচ্ছে।

কংগ্রেস দলের প্রচার অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছেন দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং গান্ধী পরিবারের সদস্যরা। তাঁরাও অনেক সভা-সমাবেশে বক্তব্য দিয়েছেন। সাধারণ নির্বাচনের এক বছর আগে অনুষ্ঠিত ভারতের বিধানসভা নির্বাচনগুলো খুবই গুরুত্ব বহন করে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব নির্বাচনের ফলাফল জাতীয় নির্বাচনেও প্রভাব ফেলে। তাই বিজেপিকর্মীরা মোদির প্রচারণাকেই গুরুত্ব দিয়েছেন।

আজিম প্রেমজি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক এ নারায়ণ বলেন, এই নির্বাচনে বিজেপি হেরে গেলে বুঝতে হবে তারা দক্ষিণ ভারতে কোনো অগ্রগতি করতে পারেনি। কিন্তু জিতলে প্রতিবেশী রাজ্য তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তামিলনাড়ুতে কর্মীদের মধ্যে যে শক্তি তৈরি হবে, তা সেসব রাজ্যে জয়ের জন্য যথেষ্ট হবে।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, কর্ণাটকে বিজয় কংগ্রেসের জন্য বিশাল প্রেরণা হবে। এটি রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড়ের মতো উত্তর ভারতের রাজ্যগুলোতে দলটির কর্মীদের চাঙ্গা করবে। এর প্রভাব পড়বে সেসব বিধানসভা নির্বাচনেও।

মনস্তত্ত্ববিদ সঞ্জয় কুমার বলছেন, কর্ণাটকে শক্তিশালী স্থানীয় নেতৃত্বের কারণে কংগ্রেস কিছুটা সুবিধা পাবে। তবে দলটির জাতীয় নেতৃত্ব দুর্বল। জাতীয় স্তরে কোনো কংগ্রেস নেতাই দলের জন্য ভোট টানতে পারেননি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সুযোগটিই নিয়েছেন মোদি। তিনি বিজেপির পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন, তাঁর ভোট টানার ক্ষমতা ব্যাপক।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং স্বরাজ ইন্ডিয়া দলের সদস্য যোগেন্দ্র যাদব বলেছেন, কর্ণাটকে বিজেপির জয় হলে, এটি শুধু কংগ্রেস নয়, পুরো বিরোধী শিবিরের মনোবলই নষ্ট করবে।

নির্বাচনী ইশতেহারে জনগণের নানা সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দুই দলই। একই সঙ্গে প্রচারণায় ধর্মীয় দিক দিয়েও একে অপরকে আঘাত করেছে দু’পক্ষ।

এদিকে, কর্ণাটকের খ্যাতি ও সার্বভৌমত্বের জন্য কাউকে হুমকি সৃষ্টি করতে দেবে না কংগ্রেস, দলটির সাবেক সভাপতি সোনিয়া গান্ধীর এমন মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন নরেন্দ্র মোদি। নির্বাচনী শেষ ভাষণে তিনি এই প্রতিবাদ জানানোর পর এখন সোনিয়া ও কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছে বিজেপি।

কর্ণাটক বিধানসভায় কোনো দলকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হলে ২২৪টি আসনের মধ্যে ১১৩টি পেতে হবে। অন্যথায় গঠন করতে হবে জোট সরকার।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.