দেশের ৪৩ জেলায় এখন মৃদু থেকে মাঝারি মানের তাপপ্রবাহ বইছে। এক দিনের ব্যবধানে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আরও অন্তত দুই দিন এমন গরম চলতে থাকবে। আর তাপপ্রবাহের পরিধি বিস্তৃত হতে পারে। এমন গরমের মধ্যেই আবার বঙ্গোপসাগরে দেখা দিয়েছে লঘুচাপ। এটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। সরকারের সংস্থাটির আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, অন্তত তিন কারণে এত গরম পড়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ সোমবার সকাল নয়টায় আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল বিভাগসহ ঢাকা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, মৌলভীবাজার, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, চাঁদপুর, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ও বান্দরবান জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে ও বিস্তার লাভ করতে পারে।
রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগে মোট জেলার সংখ্যা ২৪। এর পাশাপাশি ১৯ জেলায় তাপপ্রবাহ বইছে। সব মিলিয়ে তাপপ্রবাহ চলা জেলার সংখ্যা ৪৩।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
আবহাওয়ার বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামান সাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এটি ঘনীভূত হতে পারে। পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
এমন গরম কেন, কয় দিন থাকবে
রাজধানীসহ দেশের সর্বত্র তাপমাত্রা গত ২৪ ঘণ্টায় বেড়েছে। এর মধ্যে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়ার অধিদপ্তরের সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতে অনুযায়ী, দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়, ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের ২৪ ঘণ্টায় এই চুয়াডাঙ্গাতেই দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা আজ ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের ২৪ ঘণ্টায় এ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নামজুল হক আজ বলেন, তিনটি কারণে তাপমাত্রা বাড়ছে। এক, এপ্রিল ও মে মাস দেশের উষ্ণ মাস। গত এপ্রিল মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টি হয়েছে। এ দুই মাসের বৈশিষ্ট্যের কারণেই এখন গরম বেশি।
গরম হওয়ার দ্বিতীয় কারণ হলো কম বৃষ্টি হওয়া। মে মাসের শুরুতে দেশের বিভিন্ন স্থানে কিছু কিছু বৃষ্টি হলেও গত দুই দিন বৃষ্টি একেবারেই কম। আর এ কারণে গরম বাড়ছে।
গরম বেড়ে যাওয়ার তৃতীয় কারণ হিসেবে নাজমুল হক সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কথা বলেন। তাঁর মতে, এখন সাগর থেকে হাওয়া আসছে না; বরং ভূপৃষ্ঠের হাওয়া সাগরের দিকে ছুটছে। আর এ কারণে গরম বেশি।
গরম বাড়তে থাকলেও এপ্রিল মাসে যেভাবে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর গেছে, এ মাসে তেমন না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ। আজ তিনি বলেন, গরম বেশি অনুভূত হওয়ার কারণ, বাতাসে আর্দ্রতা বেশি। তিনি জানান, আরও অন্তত দু–তিন দিন এমন গরম থাকতে পারে।