রমে পানিশূন্যতা দূর করতে অনেকেই ফলের শরবত, কৃত্রিম জুস, ডাবের পানি, স্যালাইন ইত্যাদি খাচ্ছেন। অনেকে গোটা ফল খাওয়ার চেয়ে গরমে ফলের রস বা শরবত খাওয়াকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন। তবে খাঁটি কথা হলো, পানির চাহিদা পূরণ করতে পারলেও গোটা ফলে যে পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়, তা ফলের রস বা শরবতে পাওয়া যায় না।
ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটোকেমিক্যাল রয়েছে। এ ছাড়া ফলে রয়েছে ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজ। ফল আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, ভিটামিন ও খনিজ লবণের চাহিদা পূরণ করে।
গোটা ফল খাওয়ার অন্যতম উপকারিতা হলো এতে প্রচুর আঁশ পাওয়া যায়। ফলের আঁশ আমাদের পরিপাকতন্ত্রের জন্য উপকারী, হজমে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। প্রচুর আঁশ থাকায় ফল দীর্ঘ সময় পেটে থাকে। এতে খিদে কম লাগে, পেট ভরা অনুভূত হয়। যার কারণে অতিরিক্ত অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া হয় না, ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। কিন্তু যখন ফলের রস করা হয়, তখন এর আঁশ নষ্ট হয়ে যায়। পাশাপাশি অন্যান্য যে পুষ্টি উপাদান থাকে, সেগুলোরও অনেকাংশ নষ্ট হয়ে যায়।
গোটা ফল আমাদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, হৃদ্যন্ত্র ভালো রাখে, ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। ফলের রসে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গোটা ফলের চেয়ে ২৩ থেকে ৫৪ শতাংশ কম থাকে। ফলের রসে চিনির পরিমাণ গোটা ফলের চেয়ে প্রায় ৩৫ শতাংশ বেশি থাকে, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ফলের রস খেলে তাই পুরোপুরি ফলের যে পুষ্টিগুণ, সেটা আর পাওয়া যায় না।
তবে কেউ দৈনিক গোটা ফল খাওয়ার পাশাপাশি যদি পানির চাহিদা পূরণে ফলের রস খেতে চান, সে ক্ষেত্রে ঘরে তৈরি টাটকা ফলের রস বা শরবত করে খাবেন। বাইরের কৃত্রিম শরবত অবশ্যই খাওয়া যাবে না। যেহেতু ফল প্রাকৃতিকভাবেই মিষ্টি, তাই ফলের রসে আলাদা করে চিনি যোগ না করাই স্বাস্থ্যসম্মত। গরমে চিনি দেওয়া ফলের শরবত খেলে তা পিপাসা আরও বাড়িয়ে দেয়। আর রাস্তাঘাটে যে লেবুর শরবত, আখের রস ইত্যাদি বিক্রি হয়, তা মোটেই পান করা উচিত নয়। মনে রাখবেন, গরমে খাওয়ার পানি দূষিত হয় বেশি, এতে ডায়রিয়া হতে পারে।