এবারের ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা-প্রাণহানি কমেছে: যাত্রী কল্যাণ সমিতি

0
128
আশফাক নিপুন

এবারের পবিত্র ঈদুল ফিতরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০ শতাংশ কম মানুষ যাতায়াত করেছে। ২০২২ সালের তুলনায় এবারের ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা কমেছে ১৮ দশমিক ২ শতাংশ। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি কমেছে ২১ দশমিক ১ শতাংশ।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির ‘ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন ২০২৩’-এ এসব তথ্য উঠে এসেছে। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরেন সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ১৫ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত মোট ১৫ দিনে সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়।

প্রতিবেদনের তথ্যের বরাত দিয়ে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এবারের ঈদযাত্রায় ৩০৪টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩২৮ জন নিহত হন, ৫৬৫ জন আহত। সড়ক, রেল ও নৌপথে সম্মিলিতভাবে এবার ৩৪১টি দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ৩৫৫ নিহত ও ৬২০ জন আহত হন।

২০২২ সালের তুলনায় (ঈদুল ফিতর) এবারের ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কম হয়েছে বলে জানান মোজাম্মেল হক চৌধুরী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, পরিবহনব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়া, অতিরিক্ত গরমসহ নানা কারণে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০ শতাংশ কম মানুষের যাতায়াত হয়েছে। তা ছাড়া বর্তমান সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে দেশের সড়ক-মহাসড়কের অবস্থা আগের চেয়ে এখন অনেক ভালো। এবার ঈদের ছুটি এক দিন বাড়ানোর প্রভাবও এখানে আছে।ুডি

এবারের ঈদযাত্রা আগের তুলনায় স্বস্তিদায়ক ছিল বলে উল্লেখ করেন মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারির কারণে এবারের ঈদযাত্রা খানিকটা স্বস্তিদায়ক হয়েছে। এ কারণে এবারের ঈদযাত্রায় ভোগান্তি কমার পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনাও কমেছে।

এবারের ঈদযাত্রায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে বলে জানান মোজাম্মেল হক চৌধুরী। প্রতিবেদনের তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, এবার ১৬৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটে, যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৫৪ দশমিক ৩ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৭ জন নিহত হয়েছেন, যা সড়ক দুর্ঘটনায় মোট নিহত মানুষের ৫১ শতাংশ। এ ছাড়া মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ১২০ জন।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, এবারের ঈদযাত্রায় দেশের সব সড়ক-মহাসড়কের পাশাপাশি পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল অবাধে চলাচল করেছে। এবার মোট যাত্রীর ১৮ দশমিক ২ শতাংশ মোটরসাইকেলে যাতায়াত করেছেন।

দেশে এখন মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক ‘ক্যানসারের’ মতো বেড়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্তভাবে এসব যানে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটলেও তা সংবাদমাধ্যমে আসে না। তাই এসব দুর্ঘটনার হিসাব রাখা সম্ভব হচ্ছে না।

এবার শুধু ঈদের দিনই বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর জেরে দুর্ঘটনায় ২১৬ জন রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানান মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, তাঁদের মধ্যে ৯৬ জনের অবস্থা গুরুতর। ঈদের দ্বিতীয় দিন বেলা ২টা পর্যন্ত ১০৫ জন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে এই হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁদের মধ্যে ৩৫ জনের অবস্থা গুরুতর।

মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন, সড়ক-মহাসড়কে মানসম্মত বাসের অভাবে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ইজিবাইকের মতো ছোট পরিবহন অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। এ কারণে সড়কে বিশৃঙ্খলার পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দুর্ঘটনা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.