বিসিবি নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করতে যাচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট কমপ্লেক্স। শিগগিরই পুরোদমে নির্মাণ কাজ শুরু হবে শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামের। বিলাসবহুল প্রকল্প ব্যয়বহুলও। বিসিবি কর্মকর্তাদের ধারণা, ৫০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকার মতো খরচ হতে পারে। যদিও দুই বছরের মধ্যে স্টেডিয়াম, একাডেমি ভবন, বিসিবি ভবন, ক্লাব, ক্রিকেটার্স ভবন ও মাঠ নির্মাণ করা সহজ হবে না। দ্রুত কাজ সম্পন্ন করতে গেলে খরচও বেড়ে যেতে পারে বলে ধারণা।
পূর্বাচলে পাঁচ ফেডারেশনকে জায়গা দেবে বিসিবি
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে মাহবুবুল আনাম বলেন, ‘আমাদের অবশ্য একটা হিসাব করা আছে। তবে যারা পরামর্শক, তারা বিস্তারিত নকশার কাজে আছে, সঙ্গে সম্ভাব্য খরচও দেবে তারা। আপনারা জানেন, একটি স্টেডিয়াম করতে অনেক ধরনের খরচ লাগে।
তবে বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ করে স্টেডিয়াম কমপ্লেক্স নির্মাণের পথ খুঁজছে বিসিবি। এ ছাড়া নির্মাণসামগ্রী আমদানি শুল্কছাড় চাওয়া হয়েছে রাজস্ব বোর্ডের কাছে। এই ছাড় পেলে স্টেডিয়াম নির্মাণের খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে বলে জানান মাহবুবুল আনাম। তিনি বলেন, ‘কী ধরনের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হবে, কতটুকু চাকচিক্য আনা যাবে– এর ওপর নির্ভর করে ব্যয়। তবে আমরা ধরে নিই তৃতীয় বিশ্বের দেশে নির্মাণ খরচ কম হয়। আপনি যদি ভারতের মাতারা স্টেডিয়ামের কথা জেনে থাকেন, ওটা ভারতীয় রুপি ৭০০-৮০০ কোটিতে হয়েছিল। ওটাকে যদি মডেল ধরা হয় তার তুলনায় কিছুটা কম হবে। কারণ ওখানে প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন স্টেডিয়াম।’
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছিলেন ৫০ থেকে ৬০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন স্টেডিয়াম হবে পূর্বাচলে। অস্ট্রেলিয়ার পরামর্শক প্রতিষ্ঠান পপুলার্স এই ক্রিকেট কমপ্লেক্স নির্মাণের নকশা প্রণয়নের দায়িত্ব পেয়েছে। বিসিবি কর্মকর্তাদের সামনে দুটি নকশা উপস্থাপনও করেছিল তারা। সেখান থেকে সেরাটি বেছে নিয়েছে ক্রিকেট বোর্ড। গতকাল পূর্বাচল স্টেডিয়ামের জায়গা পরিদর্শন শেষে আহ্বায়ক মাহবুবুল আনাম বলেন, ‘এখানে শুধু মাঠ না, একাডেমি ভবন, বিসিবির নিজস্ব (কার্যালয়) ভবন, একটি হোটেল (নকশায় রাখা হলেও পর্যায়ক্রমে পরে নির্মাণ করা হবে)। এ ছাড়া ক্রিকেটার্স ক্লাব ও একটি অতিরিক্ত মাঠ থাকবে। এর বাইরে পাঁচটি ফেডারেশনকে এখানে স্থাপনা দিচ্ছি। এনএসসি আমাদের অনুরোধ করেছে তাদের এখানে সংকুলান করা যায় কিনা। সে আলোকে আমরা পাঁচটি ফেডারেশনের জন্য একটি স্থাপনা নির্মাণ করে দেব।’
বিসিবি সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী জানান, এনএসসি থেকে অনেক (২৫টি) ফেডারেশনের তালিকা দেওয়া হয়েছিল, সেখান থেকে পাঁচটি ফেডারেশনের জন্য আলাদা করে একটি ইনডোর করা হবে। মূলত যে খেলাগুলো একটি অবকাঠামো ব্যবহার করে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ইভেন্ট চালাতে পারবে, তেমন পাঁচটি ফেডারেশনকে বেছে নেওয়া হয়েছে। বিসিবি অবকাঠামো নির্মাণ করে দিলেও ক্রিকেট কমপ্লেক্সের বাইরে থাকবে ফেডারেশনগুলো।
শেখ হাসিনা মাঠের জন্য স্পন্সরশিপ নিলেও কখনো এর নাম পাল্টানো হবে না বলে জানিয়েছেন বিসিবি’র এই পরিচালক। তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নামে এই স্টেডিয়ামটা আমরা উৎসর্গ করেছি। যে সহযোগিতা বা অনুদান আমাদের এই স্টেডিয়ামের জন্য তিনি করেছেন, সেটাকে স্মরণীয় করে রাখতে চাই। সুতরাং স্টেডিয়ামের নামকরণে কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। হয়তো ভেতরের বাণিজ্যিক বিষয়গুলো থাকে, সেখানে হবে। কিন্তু নামকরণের বিষয়ে আমরা অনড়।’