মেয়র পদে শক্ত কোনো প্রতিপক্ষ নেই। তাই কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়াতে আওয়ামী লীগ নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তিকে সমর্থন না–ও দিতে পারে।
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থীদের সম্পর্কে কোনো নির্দেশনাই দেয়নি আওয়ামী লীগ। ফলে ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থিতার বিষয়টি আপাতত উন্মুক্তই থাকছে। পরে পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা।
আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, যেহেতু বিএনপি সিটি নির্বাচনে অংশ নেবে না, তাই তাদের কাউন্সিলর প্রার্থীরাও নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে মেয়র পদেও শক্ত কোনো প্রতিপক্ষ না থাকায় খুলনা সিটিতে নির্বাচনী কোনো আমেজ নেই। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনকে উৎসবমুখর করতে হলে কাউন্সিলর প্রার্থিতার ক্ষেত্রে দলীয় নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তিকে সমর্থন দেওয়া নাও হতে পারে।
খুলনা মহানগরে ৩১টি ওয়ার্ড রয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে সব ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ আলাদা আলাদাভাবে প্রার্থী দিয়েছিল। এর মধ্যে বিএনপির ১৮ জন ও স্বতন্ত্র ৩ প্রার্থী জয়লাভ করেন। বাকিরা আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। তবে নির্বাচনের পর বিএনপি কাউন্সিলরদের মধ্যে ১৫ জন আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিলেন। বাকি তিনজন নির্বাচন করবেন কি না, তা নিয়ে দ্বিধায় রয়েছেন।
খুলনা নগরের প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই কাউন্সিলর পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের একাধিক নেতা-কর্মী কাউন্সিলর প্রার্থী হতে প্রচারণা চালাচ্ছেন। অনেকে আবার দলীয় সমর্থন পাওয়ার আশা করছেন।
২১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্বাচন করতে প্রচারণা শুরু করেছেন খুলনা মহানগর যুবলীগের সাবেক সদস্য মো. মশিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের কাছ থেকে শুনেছি, দল থেকে এবার নির্দিষ্ট কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়া হবে না। এ কারণে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’ কাউন্সিলর পদে নির্দিষ্ট প্রার্থী দেওয়া উচিত নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ২০ বছর ধরে কাউন্সিলর হিসেবে আছেন মো. আনিছুর রহমান বিশ্বাস। তিনি মূলত বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও গতবার স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন। পরে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। এখন মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য। অন্যদিকে, ওই ওয়ার্ডে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাসান ইফতেখার।
হাসান ইফতেখার বলেন, ‘আমরা চাই, কাউন্সিলর প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে দেওয়া হোক। ওয়ার্ডের সভাপতি থেকে শুরু করে সবাই আমাকে সমর্থন দিয়েছেন।’ বর্তমান কাউন্সিলরের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘যদি তাঁকে মনোনয়ন দেয়, তারপরও আমি নির্বাচন করব। আর তা না হলে তিনি তো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যাবেন।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম ডি এ বাবুল রানা বলেন, দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থিতা নিয়ে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি। দলের অনেকেই নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন, মনোনয়ন ফরম কিনছেন। সর্বশেষ মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ১৬ মে। এরপর পরিস্থিতি বুঝে, দলীয় ফোরামে আলোচনা করে কাউন্সিলর প্রার্থীদের সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।