চিকিৎসা খাতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছে বেশ আগেই। এখন প্রজননবিদ্যায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে যুগান্তকারী অর্জন দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে রোবোটিক নিডলের মাধ্যমে এক মায়ের গর্ভাশয়ে শুক্রাণু প্রবেশ করানো হয়েছে। আর এরপর ওই মা জন্ম দিয়েছেন দুটি মেয়েশিশু। দুই শিশুই সুস্থ আছে।
বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) বলছে, স্পেনের বার্সেলোনার একদল প্রকৌশলী এ রোবোটিক নিডল বানিয়েছেন। এটি ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের নিউ হোপ ফার্টিলিটি সেন্টারে এক নারীর গর্ভাশয়ে শুক্রাণু প্রবেশ করানো হয়। পরে তিনি গর্ভধারণ করেন।
এমআইটি থেকে প্রকাশিত এমআইটি টেকনোলজি রিভিউতে এ–সংক্রান্ত একটি নিবন্ধ প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, রোবোটিক নিডল ব্যবহার করে গর্ভধারণের পর সন্তানের জন্ম দেওয়া ঘটনা বিশ্বে এটাই প্রথম।
নিবন্ধে আরও বলা হয়েছে, এই কাজে প্রকৌশলীদের তেমন অভিজ্ঞতা ছিল না। এ ক্ষেত্রে তাঁরা সনির প্লে–স্টেশন ৫-এর কন্ট্রোলার ব্যবহার করেছেন। ক্যামেরায় দেখে তাঁরা সুচারুভাবে ওই নারীর শরীরে শুক্রাণু প্রবেশ করাতে সফল হন। পরবর্তী সময় ওই নারীর গর্ভে দুটি ভ্রূণ জন্ম নেয়, বেড়ে ওঠে। জন্ম নেয় সুস্থ-সবল দুটি মেয়েশিশু।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পাওয়া এই অর্জন আধুনিক পদ্ধতির ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশনের (আইভিএফ) খরচ অনেকটা কমিয়ে আনতে সক্ষম হবে। রোবোটিক নিডলটি তৈরি করেছে ওভারচার লাইফ নামের একটি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, ডিভাইসটি আইভিএফ পদ্ধতির খরচ কমানোর পাশাপাশি এ পদ্ধতিকে স্বয়ংক্রিয় করার পথে এক ধাপ এগিয়ে নেবে।
বর্তমানে প্রতিবছর আইভিএফ পদ্ধতিতে বিশ্বে প্রায় ৫ লাখ শিশুর জন্ম হয়। তবে এ পদ্ধতি বেশ জটিল, দীর্ঘ, শ্রম নিবিড় ও ব্যয়বহুল। প্রয়োজন হয় প্রশিক্ষিত ভ্রূণ বিশেষজ্ঞের।
ওভারচার লাইফের প্রধান প্রজননবিদ সান্তিয়াগো মুনে বলেন, বোরোটিক নিডলের এ প্রযুক্তি একদিন প্রজনন সেবাকেন্দ্রের (ফার্টিলিটি ক্লিনিক) প্রয়োজনীয়তা দূর করে দেবে।