কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক সমুদ্র উপকূলে ডুবন্ত ট্রলারে অর্ধগলিত ১০ জনের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় করা মামলায় দুই আসামিকে জিজ্ঞাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। তাঁরা হলেন মামলার এক নম্বর আসামি কামাল হোসেন ওরফে বাইট্যা কামাল ও চার নম্বর আসামি করিম সিকদার।
বুধবার দুপুরে এই দুজনকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্রিজ্ঞান তঞ্চঙ্গ্যার আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। আদালতের বিচারক শুনানি শেষে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হবে। জিজ্ঞাসাবাদে কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড এবং এর সঙ্গে কারা জড়িত, তা জানার চেষ্টা করা হবে।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এ ঘটনায় মহেশখালীর হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়ার নিহত সামশুল আলমের স্ত্রী রোকিয়া আকতার বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন। সামশুল আলম ডুবিয়ে দেওয়া ট্রলারটির মালিক।
মামলায় চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৫০-৬০ জনকে। তাঁদের মধ্যে কামাল হোসেন ওরফে বাইট্যা কামাল ও করিম সিকদারকে গতকাল বিকেলে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বাইট্যা কামাল মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী ইউনিয়নের সাইরারডেইল জালিয়াপাড়ার মো. ইলিয়াছের ছেলে। তাঁর মাছ ধরার দুটি ট্রলার রয়েছে। করিম সিকদারের বাড়ি মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের মোহরাকাটা গ্রামে। তিনি মাছ ধরার ট্রলারের মাঝি।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ গিয়াস উদ্দিন ওরফে মুনির নামের আরেক যুবককে গতকাল দিবাগত গভীর রাতে চকরিয়ার বদরখালী থেকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি ওই এলাকার মো. নুর নবীর ছেলে। আজ (বুধবার) বিকেলে তাঁকে (নবী) কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। রিমান্ড আবেদনের শুনানি হবে আগামীকাল।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ট্রলারমালিক সামশুল আলমের (নিহত) সঙ্গে মহেশখালীর ট্রলারমালিক বাইট্যা কামাল ও তাঁর ভাই আনোয়ার হোসেনের বিরোধ রয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সামশুল আলম সাগরে মাছ ধরতে গেলে আসামিরা বিভিন্ন সময় মাছ ধরতে বাধা ও হত্যার হুমকি দিতেন। পূর্বশত্রুতার জেরে তাঁরা ৫০-৬০ জন মিলে সামশুলের ট্রলারে থাকা মাছ ও জাল লুট করেন। এতে বাধা দিতে গেলে সামশুলসহ অন্যদের গলায় দড়ি পেঁচিয়ে, হাত-পা দড়ি ও জাল দিয়ে বেঁধে বোটের মাছ রাখার কক্ষে আটকে রাখেন। এরপর কাঠ দিয়ে পেরেক মেরে কক্ষ আটকে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে ট্রলারের তলা ফুটা করে দেন। এতে ট্রলারটি পানিতে ডুবে যায়।