পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পদ্মা সেতু হয়ে বাড়ি যাচ্ছেন দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ। ঈদযাত্রায় কোনো রকম যানজট, ভোগান্তি ছাড়া পদ্মা সেতু পাড়ি দিতে পেরে উচ্ছ্বসিত ঘরমুখো মানুষ। আজ শুক্রবার ভোরে মোটরসাইকেলের কিছুটা চাপ থাকলেও সকাল ৮টার পর থেকে মহাসড়ক, টোলপ্লাজা এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এতে খুশি এ পথ ব্যবহারকারীরা।
চালক, যাত্রী ও স্থানীয় লোকজন জানান, প্রতিবছর ঈদের সময় দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর বাসিন্দাদের ঈদযাত্রা মানেই ছিল ভোগান্তি। পদ্মা সেতু হওয়ার পর সব ভোগান্তির অবসান হয়েছে। এবার ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে এ যাত্রা আরও সহজ হয়েছে। পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল শুরু হয়েছে। কোনো রকম ঝামেলা ছাড়া শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে মোটরসাইকেল পারাপার হচ্ছে। প্রাইভেট কার ও বড় যানবাহনের চাপ নেই। মহাসড়কও ফাঁকা। এতে স্বস্তির সঙ্গে বাড়ি ফিরছেন ঈদে ঘরমুখো যাত্রীরা।
সকাল ১০টার দিকে পদ্মা সেতুর উত্তর টোল প্লাজা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রাইভেট কার, বাস ও ভারী যানবাহনগুলো টোল বুথের সামনে এসে কয়েক মুহূর্তের মধ্যে টোল পরিশোধ করে সেতু পারি দিচ্ছে। এক পাশ দিয়ে মোটরসাইকেল আসছে। তারাও টোল পরিশোধ করে সেতুর সার্ভিস লেন দিয়ে পারাপার হচ্ছে। ভোগান্তি ছাড়া পদ্মা সেতুতে উঠতে পেরে খুশি মোটরসাইকেলের যাত্রী ও চালকেরা।
যাত্রী ও চালকেরা শৃঙ্খলা মেনে পারাপার হচ্ছেন। সকালের দিকে মোটরসাইকেলের চাপ ছিল। তখন দুটি বুথের মাধ্যমে টোল আদায় করা হয়। চাপ কমে গেলে আবারও একটি বুথ দিয়ে টোল আদায় করা হচ্ছে। দুপুরের পর যানবাহনের হালকা চাপ বাড়তে পারে। তবে অস্বাভাবিক চাপ হবে না।
প্রাইভেট কারের যাত্রী হাশিম রেজা ঢাকার মিরপুর থেকে এসেছেন। মা–বাবার সঙ্গে ঈদ করতে আজ সকালে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছিলেন তিনি। হাশিম রেজা বলেন, ‘এক বছর আগেও ঈদে বাড়িতে ফেরা যুদ্ধের মতো ছিল। শিমুলিয়া ঘাটে গিয়ে ফেরিতে ওঠার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেছি। ফেরিতে ওঠার জন্য প্রতিযোগিতা করেছি। এখন আর কোথাও অপেক্ষা করতে হয় না।’
মোটরসাইকেলচালক রুবেল আহমেদ খুলনার বটিয়াঘাটা এলাকায় যাবেন। রুবেল বলেন, ‘মহাসড়ক, টোল প্লাজা কোথাও কোনো ভোগান্তি নেই। স্বস্তির সঙ্গে বাড়ি যাচ্ছি।’ সেতুর ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দেওয়ায় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
পদ্মা উত্তর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) পিন্টু কুমার রায় বলেন, ভোরে পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা এলাকায় মোটরসাইকেলের চাপ ছিল। সকাল আটটার পর পরিস্থিতি একেবারেই স্বাভাবিক হয়ে যায়। মহাসড়কেও গাড়ির চাপ নেই।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের অতিরিক্ত পরিচালক আমিরুল হায়দার চৌধুরী বলেন, গতকাল ভোর ছয়টা থেকে আজ ভোর ছয়টা পর্যন্ত ৩৪ হাজার ২৬৮টি ছোট-বড় যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে ১২ হাজার ৪২টি মোটরসাইকেল রয়েছে। বর্তমানে যানবাহন আসা মাত্রই টোল পরিশোধ করে সেতু পার হতে পারছে। কোথাও কোনো চাপ নেই। যাত্রী ও চালকেরা শৃঙ্খলা মেনে পারাপার হচ্ছেন। সকালের দিকে মোটরসাইকেলের চাপ ছিল। তখন দুটি বুথের মাধ্যমে টোল আদায় করা হয়। চাপ কমে গেলে আবারও একটি বুথ দিয়ে টোল আদায় করা হচ্ছে। দুপুরের পর যানবাহনের হালকা চাপ বাড়তে পারে। তবে অস্বাভাবিক চাপ হবে না।