সাতক্ষীরার কোন আম কবে থেকে পাড়া যাবে, জানাল প্রশাসন

0
182
রাসায়নিক দিয়ে পাকানো আট হাজার কেজি অপরিপক্ক আম জব্দের পর নষ্ট করা হয়। গতকাল রাতে সাতক্ষীরা শহরের বাঁকাল ট্রাকস্ট্যান্ড–সংলগ্ন এলাকায়

সাতক্ষীরার আম নিরাপদ প্রক্রিয়ায় বাজারজাত করার জন্য সময়সূচি নির্ধারণ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। সূচি অনুযায়ী, আগামী ১২ মে থেকে গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ বোম্বাই, গোপালখাস, বৈশাখীসহ অন্যান্য স্থানীয় জাতের আম পাড়া যাবে। ধাপে ধাপে অন্যান্য আম সংগ্রহ করা যাবে। ১৫ জুনের আগে আম্রপালি আম সংগ্রহ করা যাবে না।

গতকাল রোববার জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে ‘নিরাপদ আম বাজারজাতকরণ’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির।

জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা অধিক লাভের আশায় অপরিপক্ব আম পেড়ে রাসায়নিক দিয়ে পাকিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাচ্ছেন। গতকাল রাত ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে এমন ৮ হাজার কেজি আম জব্দ করেন র‌্যাব-৬ সাতক্ষীরা ক্যাম্পের সদস্যরা। পরে বুলডোজার দিয়ে পিষে জব্দকৃত আম নষ্ট করা হয়।

১২ মে থেকে গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ বোম্বাই, গোপালখাস, বৈশাখীসহ অন্যান্য স্থানীয় জাত, ২৫ মে হিমসাগর, ১ জুন ল্যাংড়া ও ১৫ জুন থেকে আম্রপালি গাছ থেকে সংগ্রহ করার নির্দেশনা দেওয়া হয় আমচাষিদের।

এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন র‌্যাব-৬ সাতক্ষীরা ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর জে এম গালিব। তিনি বলেন, সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার জিরেনগাছা থেকে দুই ট্রাকভর্তি অপরিপক্ব আম ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য দিয়ে পাকিয়ে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছিল জয়েন্ট ট্রান্সপোর্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠান। খবর পেয়ে গতকাল রাত ১১টার দিকে শহরের বাঁকাল ট্রাকস্ট্যান্ড–সংলগ্ন এলাকা থেকে দুটি ট্রাকভর্তি আট হাজার কেজি বিভিন্ন জাতের আম জব্দ করা হয়। এ সময় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল আমিনের উপস্থিতিতে বুলডোজারের চাকায় পিষে আমগুলো নষ্ট করা হয়। অভিযানে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনির হোসেন ও র‌্যাব-৬ সাতক্ষীরার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনির হোসেন বলেন, অপরিপক্ব আমে ক্ষতিকর রাসায়নিক (কার্বাইড) ব্যবহার করা হয়েছে, যেটা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। ইতিমধ্যে জেলা কৃষি বিভাগ ও জেলা প্রশাসন থেকে প্রচার করা হয়েছে, সাতক্ষীরা জেলায় ১২ মের আগে কোনো আম গাছ থেকে পাড়া যাবে না। তারপরও কিছু অসাধু আম ব্যবসায়ী ও চাষি অপরিপক্ব আম গাছ থেকে পেড়ে রাসায়নিক দ্রব্য দিয়ে পাকিয়ে রাতের অন্ধকারে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাচ্ছে।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল আমিন জানান, গতকাল জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে সাতক্ষীরায় নিরাপদ আম বাজারজাতকরণ–বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ১২ মে থেকে গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ বোম্বাই, গোপালখাস, বৈশাখীসহ অন্যান্য স্থানীয় জাত, ২৫ মে হিমসাগর, ১ জুন ল্যাংড়া ও ১৫ জুন থেকে আম্রপালি আম সংগ্রহ করার নির্দেশনা দেওয়া হয় আমচাষিদের।

আবদুল্লাহ আল আমিন বলেন, নির্ধারিত সময়ের আগে কেউ গাছ থেকে আম সংগ্রহ করলে বা কার্বাইড ও কেমিক্যাল মিশিয়ে অপরিপক্ব আম বাজারজাত করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.