বান্দরবানে আজ পাহাড়ি-বাঙালি সবাই উৎসবে মেতেছে

0
202
নববর্ষের শোভাযাত্রা পাহাড়ি ও বাঙালিদের অংশগ্রহণে জাতি ও ভাষাবৈচিত্র্যের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে বান্দরবান প্রেসক্লাব চত্বরে

বান্দরবানে আজ শুক্রবার পাহাড়ি-বাঙালি সবার উৎসব চলছে। বৈচিত্র্যের ঐকতানে পয়লা বৈশাখে বাঙালির নববর্ষ, মারমাদের সাংগ্রাইং, ম্রোদের চাংক্রান, ত্রিপুরাদের বৈসু, চাকমাদের বিজুসহ অন্যান্য জনগোষ্ঠীর উৎসব ঘিরে ঘরে ঘরে আনন্দ বিরাজ করছে। নববর্ষের শোভাযাত্রায় পাহাড়ি ও বাঙালিদের অংশগ্রহণে জাতি ও ভাষাবৈচিত্র্যের মিলনমেলায় পরিণত হয়।

পয়লা বৈশাখের শোভাযাত্রায় অংশ নিতে আজ শুক্রবার সকাল থেকে বান্দরবান প্রেসক্লাব চত্বরে নিজ নিজ ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে বাঙালি, মারমা, ত্রিপুরা, ম্রো, চাকমা, খুমি, খেয়াং, বম, লুসাই, পাংখুয়া জনগোষ্ঠীর মানুষেরা জড়ো হন। সেখানে বাঙালিসহ ১২টি জনগোষ্ঠীর নারীরা ব্যানার হাতে দাঁড়ান।

শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম, জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এ টি এম কাউছার হোসাইন প্রমুখ।

বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাটি বিভিন্ন সড়ক ঘুরে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে আসে। সেখানে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।

শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং। আজ শুক্রবার সকালে বান্দরবান প্রেসক্লাব চত্বরে

আজ মারমা, ম্রো, চাকসহ পাঁচটি জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাইং, চাংক্রান, সাংক্রাইয় উৎসবের দ্বিতীয় দিন। আর চাকমা, ত্রিপুরা ও তঞ্চঙ্গ্যাদের বিজু, বিষু ও বৈসু উৎসবের শেষ দিন। অবশ্য কোথাও কোথাও ত্রিপুরাদের বৈসু উৎসবের দ্বিতীয় দিন আজ। সাংগ্রাইং উৎসবে আজ চন্দনের জলে বুদ্ধমূর্তি স্নান করানো হয়েছে। রাতে তরুণ-তরুণীরা দলে দলে ঐতিহ্যবাহী পিঠা তৈরির অনুষ্ঠান করবেন। কাল শনিবার মারমাদের সবচেয়ে আকর্ষণীয় মৈত্রী পানি বর্ষণ উৎসব বা মৈতা রিলং পোয়ে (অনেকের কাছে পানি খেলা হিসেবে পরিচিত) জেলা শহরের রাজার মাঠে আয়োজন করা হবে।

চিম্বুক পাহাড়ে পটোসিংপাড়ায় (স্থানীয়ভাবে বলে পোড়াবাংলা) ম্রোদের স্বতঃস্ফূর্ত চাংক্রান মেলা হয়েছে। ম্রো নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণীরা দূরদূরান্ত থেকে পটোসিংপাড়ায় এসে মেলায় অংশগ্রহণ করেন। আয়োজক ছাড়াই এই চাংক্রান মেলা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে বলে ম্রোরা জানিয়েছেন।

বিজু উৎসবে চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যাদের আজ গজ্জ্যাপজ্জ্যা অর্থাৎ শেষ দিন। শেষের এ দিনে গণ্যমান্য ব্যক্তি ও মুরব্বিদের গোসল করিয়ে প্রণাম করে আশীর্বাদ নেওয়া হয়। লোকজনকে আমন্ত্রণ করে খাওয়ানো হয়। চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যাদের বিশ্বাস, গজ্জ্যাপজ্জ্যা দিনে অতিথিকে খাওয়ালে সারা বছর পরিবারে অভাব-অনটন হয় না।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.