সৈয়ব আলী এক সময় সিনেমার মাইকিং করতেন। পরে নেন খাবার হোটেল ব্যবস্থাপনার কাজ। তখন থেকেই স্বর্ণ নয়ছয়ের হাতেখড়ি। এর পর স্ত্রী, ভাই ও তাঁর ছেলেকে প্রশিক্ষিত করে সংঘবদ্ধ চক্র তৈরি করে নামেন ছলচাতুরীতে। এক বছরের মধ্যে চক্রটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, নরসিংদী, ঢাকা, ফরিদপুর, বরিশাল, যশোর, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় জুয়েলারি দোকানে প্রতারণা করে।
এর মধ্যেই সৈয়ব আলীর গ্যাং হাতিয়ে নেয় কোটি টাকার স্বর্ণালংকার। স্বর্ণ প্রতারক গাইবান্ধার সৈয়ব আলীর শেষ রক্ষা হলো না। ফরিদপুর পুলিশের জালে আটকা পড়েছেন সপরিবারে। শনিবার বিকেলে গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। সৈয়ব আলী তাঁর ইউনিয়নের যুবলীগ সভাপতি।
রোববার সকালে ফরিদপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মাদ ইমদাদ হুসাইন জানান, সম্প্রতি আলফাডাঙ্গার এক স্বর্ণ দোকানির অভিযোগ তদন্তে নামে ফরিদপুর পুলিশ। তদন্ত করতে গিয়েই চক্রটি সামনে আসে। গ্রেপ্তার চার সদস্য হলেন– গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরের বড় দাউদপুরের সৈয়ব আলী (৪৭), তাঁর স্ত্রী নাজমিন বেগম (৪২), সৈয়ব আলীর ভাই তৈয়ব আলী (৪১) ও তাঁর ছেলে তামিম রহমান সজীব (২১)। তাঁদের কাছ থেকে ২২ ক্যারেটের চারটি স্বর্ণের চেইন, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে এ প্রতারকরা জানিয়েছে, এক বছর আগে সৈয়ব আলী স্বর্ণ প্রতারণা সম্পর্কে হাতে কলমে কৌশল রপ্ত করেন। আর তাঁর স্ত্রী নাজমিন বেগম স্থানীয় পীরগঞ্জের লাকমিঠাপুরের বৃদ্ধ হাসনা বেগমের কাছ থেকে প্রতারণার কৌশল শিখেছেন। স্বামী-স্ত্রী দু’জন মিলে ভাই তৈয়ব আলী ও ছেলে তামিম রহমান সজীবকে প্রশিক্ষণ দেন। কোটিপতি সৈয়ব আলী এলাকার ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান। সৈয়ব আলী স্থানীয় একটি হত্যা মামলায় এর আগে একবার গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন।