ত্র তিন দিন আগে টি২০তে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। সেই তরতাজা সুখস্মৃতি নিয়ে আজ সিলেটে ইউরোপের আরেক দেশ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে নামছে বাংলাদেশ। যদিও আইরিশদের বিপক্ষে আজ ওয়ানডে দিয়ে শুরু হচ্ছে সিরিজ। তবে ফরম্যাট ভিন্ন হলেও ইংলিশদের গুঁড়িয়ে দিয়ে টাইগার শিবির এখন আত্মবিশ্বাসে টগবগিয়ে ফুটছে। আইরিশদের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে নিজ দলের প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা নিয়ে গণমাধ্যমে বিস্তারিত বলেছেন বাংলাদেশ কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। লঙ্কান এ কোচের সংবাদ সম্মেলনের উল্লেখযোগ্য অংশ সমকাল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
হাথুরুসিংহে: আয়ারল্যান্ডকেও আমরা ইংল্যান্ডের মতো সম্মান করি। কিন্তু আমরা কোনো দলকে ভয় পাই না। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আমরা যেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ঠিক তেমনটাই হবে, কোনো কমতি থাকবে না। যখন আমরা নিজেদের সেরাটা খেলি, তখন যে কোনো দলকে হারিয়ে দিতে পারি। এটাই আমাদের মন্ত্র।
হাথুরুসিংহে: আপনি তো আমাকে ব্যাখ্যা করার সুযোগই দিলেন না, বলে দিলেন! এটা আসলে আপনার মত। আমার মনে হয় না সে সেরা সময় পেছনে ফেলে এসেছে। আমরা চেষ্টা করছি বিশ্বকাপের আগে আমাদের খেলোয়াড়দের পুল বাড়াতে। বিশ্বকাপের কাছাকাছি গিয়ে যদি কারও কিছু হয়ে যায়, তাহলে আমাদের হাতে যেন পর্যাপ্ত খেলোয়াড় থাকে। যাদের আমরা দেখছি এবং নিজের ভূমিকা পালন নিয়ে তাদের ওপর যেন আস্থা রাখতে পারি। বিশ্বকাপের আগে আমাদের হাতে মাত্র ১৫টি ম্যাচ আছে। তাই আমাদের একটু তাড়াহুড়ো করতে হচ্ছে। আমরা এমন কিছু খেলোয়াড় দেখতে চাইছি, যাদের আমরা মনে করি যে অবদান রাখতে পারবে। রিয়াদ এখনও পরিকল্পনায় আছে।
হাথুরুসিংহে: এটার উত্তর দেওয়া খুব কঠিন। আপনি বের করার চেষ্টা করছেন যে আমরা মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে কী ভাবছি। রিয়াদ যথেষ্ট করেছে, তার অভিজ্ঞতা অনেক। আমরা জানি যে তার কাছ থেকে কী পেতে পারি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ের মানের অন্য কিছু খেলোয়াড় আমরা তুলে আনতে চাই। এটা শুধু স্কিলের ব্যাপার না। এ পর্যায়ে তাদের সে ভূমিকা পালনের সামর্থ্য আছে কিনা, সেটি দেখার ব্যাপার। এর মানে এই নয় যে কেউ ভালো পারফর্ম করলে মাহমুদউল্লাহর সময় শেষ। সে এখনও আমাদের পরিকল্পনার মধ্যে আছে।
হাথুরুসিংহে: ঘরোয়া ক্রিকেটে তারা যে স্বাধীনতা নিয়ে খেলে, এখানেও সে তাড়না নিয়ে খেলতে পারে। তারা কী করতে পারে, সেটা আমরা ঘরোয়া টুর্নামেন্টে দেখেছি। তাদের পারফরম্যান্স ও ব্যাটিংয়ের সুনির্দিষ্ট ধরনের কারণেই দলে নিয়েছি। পেস ও স্পিনের বিপক্ষে তাদের রেকর্ড দেখেছি। আমরা তাদের মানসিক আত্মবিশ্বাসটা দিচ্ছি যেন তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়েও ভালো করতে পারে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভূমিকা পালন করতে পারবে, আমরা সে ধরনের ক্রিকেটার খুঁজছি। কঠিন অবস্থা থেকে ম্যাচ জেতাতে পারবে, এ রকম চরিত্র আমাদের প্রয়োজন।
হাথুরুসিংহে: সে আমাকে দারুণভাবে মুগ্ধ করেছে। প্রথম টি২০-এর কথা যদি ধরেন, সে যেভাবে শুরু করেছিল, সেটাই আমাদের মোমেন্টাম এনে দিয়েছিল। তার শরীরী ভাষা দেখে এবং পরে আমাদের কোচিং স্টাফদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি, আমাদের মানসিকতায় সবাই অবাক হয়েছে এবং শুরুটা তার মাধ্যমেই হয়েছিল। রান কিংবা উইকেটের চেয়ে আমি মানসিকতা বেশি দেখি।
হাথুরুসিংহে: ঠিক এ কারণেই (বিশ্বকাপের আগে তরতাজা রাখা) তাসকিনকে আমরা শেষ ম্যাচে খেলাইনি, বিশ্রামে রেখেছি। আমরা তাকে ঠিক রাখতে চাই। সে আমাদের স্ট্রাইক বোলারদের একজন। সে বিশ্বমানের বোলার। সে সঙ্গে আমরা ফিজকেও ঠিক রাখতে চাই। সামনে প্রচুর খেলা রয়েছে। এতে আমাদের দলের অন্য পেস বোলাররা খেলার সুযোগ পাবে। এতে তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়বে, আমরাও দেখতে পারব তারা চাপের মুখে কীভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে।
হাথুরুসিংহে: স্পিন বোলিং ইউনিটের পরিধিও আমরা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। তাইজুল আমাদের ১ নম্বর টেস্ট স্পিনার। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেতে কিন্তু সে দারুণ বোলিং করেছে। আমরা জানি সে প্রস্তুত রয়েছে। এখন আমরা নাসুমকে সুযোগ দিয়েছি। সে কেমন করে, সেটা দেখতে চাই। যদি সে-ও ভালো করে, তাহলে বিশ্বকাপের আগে আমাদের দু’জন স্পিনার প্রস্তুত হয়ে যাবে।