পাকিস্তানের সাপ্তাহিক মূল্যস্ফীতি ৪২.২৭ শতাংশ

0
134
মূল্যস্ফীতি

তবে এখানেই শেষ নয়, দেশটির জনপ্রিয় দৈনিক দ্য ডনের সংবাদে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের স্বল্পমেয়াদি মূল্যস্ফীতি যে সেনসিটিভ প্রাইস ইনডেক্সে (এসপিআই) পরিমাপ করা হয়, তা আরও তীব্র হতে পারে। বিশেষ করে রুপির অবমূল্যায়ন, জিএসটি বৃদ্ধি ও জ্বালানির উচ্চমূল্যের কারণে মূল্যস্ফীতির ফাঁস আরও শক্ত হতে পারে। সম্প্রতি এসব বাড়লেও সরকারি পরিসংখ্যানে তার ছাপ পড়েনি।

তবে আগের সপ্তাহের তুলনায় ৯ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়া সপ্তাহে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১ দশমিক ৩৭।

এর আগে ২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৪২ দশমিক ৭০। এরপর ৯ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়া সপ্তাহে মূল্যস্ফীতির হার ছিল সবচেয়ে বেশি।

এসপিআই ঝুড়িতে যে ৫১টি পণ্যের দাম পরিমাপ করা হয়, তার মধ্যে ২৯টি পণ্যের দাম বেড়েছে, ৮টি পণ্যের দাম কমেছে আর বাকি ১৪টি পণ্যের দাম স্থিতিশীল ছিল।

বড় ধরনের সংকটে পড়েছে পাকিস্তান। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ কমতে কমতে তলানিতে ঠেকেছে। মূল্যস্ফীতি আকাশ ছুঁয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের দ্বারস্থ হয় তারা। কিন্তু তারা যেন কিছুতেই পাকিস্তানের কাছে ধরা দিচ্ছে না। আইএমএফের সঙ্গে কর্মী পর্যায়ের ঐকমত্য না হওয়া প্রসঙ্গে পাকিস্তান সরকারের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, আইএমএফ জনসমক্ষে বলছে গরিববান্ধব নীতি করতে; কিন্তু আদতে তারা যা বলছে, তাতে গরিব মানুষের জীবন আরও কঠিন হয়ে যাবে।

আইএমএফ এখন চাচ্ছে, পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত নীতি সুদহার বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া অন্য যেসব বিষয়ে তাদের অগ্রাধিকার পরিবর্তন হয়েছে, সেগুলো হলো মুদ্রার বিনিময় হার নির্ধারিত না রাখা, যাতে যুদ্ধবিধ্বস্ত ও নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত আফগানিস্তানে অর্থ পাচার না হয়, বন্ধুরাষ্ট্রগুলো পাকিস্তানকে সহায়তা করবে—এই মর্মে লিখিত নিশ্চয়তা ও বিদ্যুতে সারচার্জের বিধান অব্যাহত রাখা।

দ্য ডন আরও জানিয়েছে, আইএমএফ ধনীদের ওপর করারোপের কথা বললেও এখন বিক্রয় কর বৃদ্ধির জন্য চাপাচাপি করছে। এতে মূল্যস্ফীতির হার আরও বাড়বে। কিন্তু ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠানের বিদেশি মুদ্রা লেনদেনে করারোপের প্রস্তাবের বিরোধিতা করছে তারা। আবার বন্যার ক্ষয়ক্ষতি পোষাতে উচ্চ আয়ের মানুষের ওপর লেভি আরোপেরও বিরোধিতা করছে আইএমএফ।

এদিকে ইকোনমিক টাইমসের এক খবরে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক দীনতা মোকাবিলায় পাকিস্তান গত ৭৫ বছরে ২৩ বার আইএমএফের বেইল আউল প্যাকেজ সহায়তা নিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের সাবেক গভর্নর মুর্তজা সায়্যিদ জিও নিউজকে বলেছেন, ‘বাস্তবতা হলো আমরাই হলাম আইএমএফের সবচেয়ে নিয়মিত গ্রাহক।’

প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারতের সঙ্গে তুলনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে একই সঙ্গে স্বাধীনতা অর্জন করা ভারত মাত্র সাতবার আইএমএফের দ্বারস্থ হয়েছে। ১৯৯১ সালে মনমোহন সিংহের যুগান্তকারী সংস্কারের পর থেকে তারা একবারও আইএমএফের কাছে যায়নি।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.