বিরোধী জোট বলছে, তারা অর্থনীতি, নাগরিক অধিকার, পররাষ্ট্রনীতিসহ এরদোয়ানের অনেক নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে।
ধারণা করা হচ্ছে, নির্বাচনে কিলিচদারোগ্লু তুরস্কের অর্থনৈতিক সংকট ও মুদ্রাস্ফীতির সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন। এ ছাড়া গত মাসের ভয়াবহ ভূমিকম্পের প্রভাবকেও পুঁজি করতে পারেন। ওই ভূমিকম্পে প্রায় ৪৬ হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছে।
এরপরও সাবেক অর্থনীতিবিদ কিলিচদারোগ্লু নির্বাচনে এরদোয়ানকে পরাজিত করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ, দেশটিতে সবচেয়ে বেশি দিন ক্ষমতায় থাকা এরদোয়ান তাঁর ক্যারিশমা দেখিয়ে এক ডজনেরও বেশি নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন।
গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট পদে বিরোধী জোটের মনোনয়নের বিষয়ে কেমাল কিলিচদারোগ্লুর নাম ঘোষণার বিষয়ে একমত পোষণ করে পাঁচটি দল। আর ডানপন্থী আইওয়াইআই পার্টির নেতা মেরাল আকসেনার এই প্রার্থীর নির্বাচনে হেরে যাওয়ার সংশয় প্রকাশ করেন।
পরে আইওয়াইআই পার্টি প্রেসিডেন্ট পদে ইস্তাম্বুল ও আঙ্কারার সিএইচপি মেয়র ইকরাম ইমামোগ্লু ও মনসুর ইয়াভাসের নাম প্রস্তাব করেন। কিন্তু বাকি পাঁচ দল এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। পরে এ বিষয়ে তুমুল তর্কবিতর্ক শুরু হয়। এর ৭২ ঘণ্টা পর জোট গতকাল আবার বৈঠকে বসে। বৈঠকে ইস্তাম্বুল ও আঙ্কারার মেয়রদের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার প্রস্তাব করা হলে সব দলের মধ্যে সমঝোতা হয়। এর পরেই প্রেসিডেন্ট পদে কেমাল কিলিচদারোগ্লুর নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়।
কিলিচদারোগ্লু এর আগে প্রায় প্রতিটি নির্বাচনেই হেরেছেন। তবে অভ্যুত্থানচেষ্টার পর সাংবাদিক ও শিক্ষাবিদের ওপর দমননীতি চালানোর প্রতিবাদে ২০১৭ সালে আঙ্কারা থেকে ইস্তাম্বুল পর্যন্ত ‘জাস্টিস মার্চ’ করার কারণে তাঁর জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়।
কিলিচদারোগ্লু তাঁর বক্তব্যে বলেন, অন্য পাঁচটি বিরোধী দলের নেতারাও ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তুরস্কের কুর্দিপন্থী পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (এইচডিপি) বলেছে, তারা উন্মুক্ত আলোচনার পরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কিলিচদারোগ্লুকে সমর্থন দিয়েছে।
দলের সহনেতা মিথাট সানকার প্রাইভেট ব্রডকাস্টার হাবারটার্কে লাইভ ব্রডকাস্টে বলেছিলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা শক্তিশালী গণতন্ত্রে উত্তরণ। আমরা যদি মৌলিক নীতিতে একমত হতে পারি, আমরা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তাঁকে সমর্থন করতে পারি।’
তুরস্কের বিরোধী দলগুলো ২০১৯ সালের স্থানীয় নির্বাচনে এরদোয়ানের একে পার্টিকে হারিয়ে ইস্তাম্বুল, আঙ্কারাসহ প্রধান মিউনিসিপ্যালিটিগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। এই সাফল্যের পর থেকে তুরস্কের বিরোধী জোট একে অপরকে সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে আরও আন্তরিক হয়েছে।
তবে দুই দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা এরদোয়ানের কাছে গতবারের ভোটে পরাজিত হয়েছে বিরোধী জোট।