মানববন্ধনে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী অপু মুন্সী বলেন, ‘গত বছর হল সংযুক্তি ফি ছিল ৯০০ টাকা। সেটা কীভাবে রাতারাতি বাংলাদেশের ব্রয়লার মুরগির মতো বেড়ে ২ হাজার ৮০০ টাকা হয়ে গেল। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানতে চায়, হলে কী এমন সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হলো যে হল ফি ২ হাজার ৮০০ টাকা হয়ে গেল? এই টাকা দিয়েও তো আমরা হলে উঠতে পারছি না।’
আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী মাহাদী হাসান বলেন, বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতিতে যখন বলা হচ্ছে কীভাবে খরচ কমাতে হবে, মানুষ কীভাবে অল্প খরচে তার দৈনন্দিন চাহিদা মেটাবে, তখন অযাচিতভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে হল ফি। তাঁর এক বন্ধু সকালবেলা নাশতা করেন না। বেলা দুইটার দিকে ভাত খান। খাওয়ার সময় বেশি ভাত খান, যাতে রাতে আবার খাওয়া না লাগে। তাঁর বাবা একজন রিকশাচালক। নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন। টাকার কারণে তিনি ঠিকমতো ভাত খেতে পারেন না। এই অযাচিত ফি তিনি কীভাবে দেবেন?
স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী সজীব বলেন, হল ফি প্রাধ্যক্ষ পরিষদ থেকে পাস হয়ে ৯০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা করা হয়েছে। বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের পক্ষে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে। তাই তাঁরা মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি বিবেচনায় নেবে। তা না হলে শিক্ষার্থীরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক ও বেগম খালেদা জিয়া হলের প্রাধ্যক্ষ সৈয়দা নুসরাত জাহান বলেন, শিক্ষার্থীরা ৯০০ টাকা বলছেন। তবে এটা বিভিন্ন হলে বিভিন্ন রকম ছিল। তাঁর জানামতে এটা সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত ছিল। তাঁরা এটা সমন্বয় করতে চেয়েছিলেন। এ ছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে সবকিছুরই দাম বেড়েছে। হলগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয় কোনো বরাদ্দ দেয় না। হলগুলো নিজস্ব আয়ে চলে। তাই ২ হাজার ৮০০ টাকা করা হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা যেহেতু এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন, তাই তাঁরা এ বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামীকাল সোমবার এ নিয়ে আলোচনা হবে। সেখানে অবশ্যই শিক্ষার্থীদের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।