সোনিয়ার পরিবারের মতো তাঁর শ্বশুরবাড়ির আর্থিক অবস্থাও ভালো নয়। এদিকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তানকে হারিয়ে দিশাহারা শামীমের মা বুলবুলি খাতুন।
সোনিয়ার মামা ভ্যানচালক খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘চিকিৎসার খরচ জুগাড় করার চেষ্টা করা হচ্চে। মানুষজনের কাচে হাত পাইতপো (পাতব), দেখি কী হয়! এখনো শামীমের মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি সোনিয়াকে। তবে কতক্ষণ গোপন রাখতি পারা যাবে, সেটাই প্রশ্ন।’
গতকাল সকালে চুয়াডাঙ্গা জেলা সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে ফুরশেদপুর গ্রামের নওদাপাড়ায় গিয়ে কথা হয় শামীমের স্বজনদের সঙ্গে। শুকনা কলাপাতায় ঘেরা বাড়িটিতে এখন শুধু মাতম। অথচ কয়েক দিন আগেই পরিবারে নতুন সদস্য যোগ হওয়ায় বাড়িজুড়ে ছিল উৎসব।
স্বজনেরা জানান, ১৫ বছর আগে স্বামীকে হারিয়েছেন বুলবুলি খাতুন। স্বামীর মৃত্যুর পর হাঁস-মুরগি পালনের পাশাপাশি অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করে সন্তানদের খাবার জুগিয়েছেন। দুই মেয়ে স্বপ্না খাতুন ও সুমী খাতুনকে বিয়ে দেন। তবে বড় মেয়ে স্বপ্নার বছর পাঁচেক আগে বিচ্ছেদ হয়েছে। এক সন্তান নিয়ে স্বপ্না এখন মায়ের বাড়িতে থাকেন। চার সদস্যের সংসারে উপার্জনকারী ছিলেন শামীম। হঠাৎ শামীমের মৃত্যুর পর গোটা পরিবারে চরম অনিশ্চয়তা নেমে এসেছে।
বুলবুলি খাতুন বলেন, ‘আমার মানিক (শামীম) সাত বচর ধইরে সুংসার চালায়। সুংসারে ককোনো ভাত-কাপুড়ির অভাব হয়নি। এট্টা এক্সিডেন্ট সবকিছু তচনচ করে দিল। সামনে চোকে খালি অন্দকার দেকচি।’
সোনিয়াকে আবার কবে হাসপাতালে দেখতে যাবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে বুলবুলি বলেন, ‘বউমার চিকিস্যার জন্যি ট্যাকা দিয়া দরকার। কনে পাব, বুজে উটতি পারচিনে।’