ঢাকা শহর থেকে সরিয়ে দুরপাল্লার বাসের কাউন্টার টার্মিনালে নিতে এক মাস সময় বাড়িয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস নেতৃত্বাধীন কমিটি। আগের সিদ্ধান্ত ছিল, এপ্রিল থেকে ঢাকা শহরের বাস কাউন্টার থাকবে না। আজ বুধবার তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, সিলেট ও কুমিল্লার বাসের কাউন্টার ২ মে থেকে শহরে থাকবে না। সায়েদাবাদ টার্মিনাল থেকে চলবে এসব বাস।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। নগর ভবনে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে অংশ নেওয়া সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেছেন, জুলাই পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। অন্য নেতারাও একই দাবি করেছেন। পরিবহন নেতারা কাউন্টার সরানোর বিরুদ্ধে।
বৈঠকে তাঁরা বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতায় আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালগুলো ব্যবহার উপযোগী হওয়ার পরেই ঢাকা শহর থেকে কাউন্টার সরানো এবং ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে চলা দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলে চলা যেসব বাসের রুট পারমিট বন্ধ রয়েছে, সেগুলো দেওয়ার প্রস্তাব করেন। মেয়র তাপস বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সভাপতি। তিনি বলেন, এগুলো পুরোপুরি বিবেচনার মানে ‘তালগাছ আমার’।
বহু নামীদামী পরিবহনের বাস কলাবাগান, শ্যামলী, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে চলে। কাউন্টারের সামনে রাতে সড়কে রাখা হয় বাস। এতে যানজট হয়। তা নিরসনে দুই মেয়র কাউন্টার সরাতে চাইলেও পরিবহন নেতারা রাজি নন। তাঁরা গত ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছে, টার্মিনাল উচ্ছেদ থেকে মেয়রকে বিরত রাখতে। পরিবহন নেতাদের যুক্তি, ১৯৮৪ সালে সায়দাবাদ, মহাখালী ও গাবতলীতে টার্মিনাল হয়েছে। ৩৯ বছরে বাস বেড়েছে শতগুণ। টার্মিনালে জায়গা নেই। তাই বাধ্য হয়ে মালিকরা শহরে কাউন্টার খুলে, সেখান থেকে বাস চালাচ্ছেন।
সভা সূত্র জানিয়েছে, বুধবারও একই যুক্তি দেন পরিবহন নেতারা। বলেন, কাউন্টার উচ্ছেদের পর চালক শ্রমিকরা গাড়ি না চালালে এই দায় তঁদের নয়। জবাবে মেয়র তাপস বলেন, ‘বাসকে টার্মিনালে ঢুকতেই হবে। নইলে গণপরিবহনের শৃঙ্খলা আসবে না। এপ্রিলে ঈদ। ঈদের জন্য কাউন্টার সরাতে এক মাস সময় দেওয়া হচ্ছে। মে দিবসের পরেরদিন সিলেট ও কুমিল্লার সব বাসের কাউন্টার সায়েদাবাদ টার্মিনালে স্থানান্তর করতে হবে। এর আগেই সায়দাবাদের আধুনিকায়ন হবে। আগামী বছরের ডিসেম্বরে কাঁচপুরের নতুন আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণ হবে। তখন সেখান থেকেই চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেট ও নোয়াখালী অঞ্চলের সব জেলার বাস চালাতে হবে।’
উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘রোজায় যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে হবে। যানজট কমাতে আন্তঃজেলা টার্মিনাল শহরের বাইরে নেওয়া হবে। মেট্রোরেলের স্টেশনের সঙ্গে টার্মিনালগুলোর সমন্বয় করা হবে। মহাখালী বাস টার্মিনাল পূর্ব দিকে বর্ধিত সক্ষমতা বাড়ানো হবে। দ্রুত এ কাজ করা হবে। মাহখালী থেকে চলবে সিলেটের বাস। বিমানবন্দর সড়কে কোনো কাউন্টার থাকবে না।’
বৈঠকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলির সদস্য এবং সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ও সংসদ সদস্য শাজাহান খান, ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা, মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষেও নির্বাহী পরিচালক সাবিহাসহ সরকারি সংস্থার উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ছিলেন।