রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের মিঠামইনের গ্রামের বাড়িতে আজ মঙ্গলবার পরম অতিথি হয়ে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হাওরের ২৩ জাতের মাছের পদে দাওয়াত খাবেন তিনি। সঙ্গে থাকবে হাওরের অর্থকরী রাজহাঁস ও পাতিহাঁসের মাংস। থাকবে মুরগি, খাসি ও গরুর মাংস। সেই সঙ্গে থাকবে জেলার ব্র্যান্ডপণ্য অষ্টগ্রামের পনির আর নানা জাতের পিঠা। বড় মাছের মধ্যে থাকবে আইড়, রুই, কাতলা, বোয়াল, চিতল, বাইন ইত্যাদি। বঙ্গভবনের বাবুর্চিসহ পরিবারের গৃহিণীরাই এসব আয়োজন করছেন। এসব তথ্য জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতির জ্যেষ্ঠ পুত্র স্থানীয় এমপি রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক।
তবে এই বিশেষ সম্মানিত অতিথিকে স্বাগত জানাতে এক দিন আগেই গতকাল সোমবার বিকেলে হেলিকপ্টারযোগে মিঠামইন পৌঁছেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। সঙ্গে এসেছেন সহধর্মিণী রাশিদা হামিদ ও একমাত্র কন্যা স্বর্ণা হামিদসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা।
প্রধানমন্ত্রী আজ সকাল ১০টায় ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে অবতরণ করবেন মিঠামইনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ সেনানিবাসে। সেখানে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে সেনানিবাসের উদ্বোধন ও পতাকা উত্তোলন করবেন। এর পর তিনি যাবেন রাষ্ট্রপতির কামালপুর গ্রামের বাড়িতে। সেখানে তিনি সড়ক ও সেতুমন্ত্রী এবং দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কয়েকজন সফরসঙ্গীকে নিয়ে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন। সেখানে থাকবেন সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদও।
মধ্যাহ্নভোজ শেষে বিকেলে মিঠামইনে সুধী সমাবেশে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন রাষ্ট্রপতির ছোট ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল হক।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে নির্মাণ করা হয়েছে বহু দৃষ্টিনন্দন তোরণ। পুরো জেলায় যেন সাজ সাজ রব। বক্তৃতার জন্য নির্মাণ করা হয়েছে সুদৃশ্য নৌমঞ্চ। মিঠামইনে তাঁকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কয়েক দিন ধরে আনন্দ মিছিল হয়েছে। সেনানিবাস থেকে রাষ্ট্রপতির বাড়ি যাওয়ার রাস্তা কামালপুর ফায়ার সার্ভিস অফিস এলাকা থেকে বক্তৃতা মঞ্চ পর্যন্ত ১৩টি তোরণ করা হয়েছে। ফেস্টুন দিয়ে রাস্তার দু’পাশ সুসজ্জিত করা হয়েছে। এ ছাড়া পল্লী বিদ্যুৎ অফিস থেকে মঞ্চ পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশ সাদা কাপড়ে মুড়ে দেওয়া হয়েছে। আবদুল হামিদ যখন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার, ১৯৮৮ সালের সেপ্টেম্বরেও একবার শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মিঠামইন এসেছিলেন। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আবারও মিঠামইনে একসঙ্গে মিলিত হচ্ছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার বৈষ্ণব জানিয়েছেন, সুধী সমাবেশের প্যান্ডেলে ৮০০ চেয়ার রাখা হয়েছে। প্রবেশাধিকার সীমিত হলেও প্রধানমন্ত্রীকে একনজর দেখার জন্য জেলার অন্যান্য উপজেলাসহ হাওরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ ট্রলারযোগে মিঠামইনে অবস্থান নিয়েছেন। এমনকি পার্শ্ববর্তী হবিগঞ্জ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকেও প্রচুর লোক এসেছেন নৌপথে। যদিও নিরাপত্তা ব্যবস্থার কড়াকড়ির কারণে তাঁদের সমাবেশস্থল থেকে অনেক দূরে থাকতে হবে। তার পরও পুরো হাওরাঞ্চল লোকে লোকারণ্য হয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন তিনি।