মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, দেশে প্রাণিসম্পদ খাত স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে। এখন চাহিদা পুরনোর পরে বাড়তি থাকছে। সে কারণে এখন প্রাণিসম্পদ রপ্তানিতে আমরা এখন মনোযোগী হচ্ছি।
শনিবার প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী ২০২৩ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে পহেলা মার্চ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী ২০২৩ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র সংলগ্ন পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে একটি প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, এ খাতে ব্যাপক সাফল্যের জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তারা এ খাতে বিপ্লব এনেছে। অভাবনীয় সাফল্য এনেছে বিগত কয়েক বছর। আগে ভারত মায়ানমার থেকে গরু না এলে কোরবানি হতো না। এখন আর আমরা বিদেশের ওপর নির্ভর নই। এখন কোরবানির পরও পশু অবিক্রীত থাকে।
তিনি বলেন, এ খাতকে আমরা সর্বাত্মক সহায়তা করছি। ইতোমধ্যে মাছ রপ্তানি শুরু হয়ে গেছে। এক সময় আমরা মাংস ডিম দুধ রপ্তানি করতে পারব।
মন্ত্রী বলেন, প্রাণিসম্পদ খাতের প্রসারের কারণে বিগত করোনার সময় আমাদের প্রাণীজ খাদ্যের কোন সংকট হয়নি। প্রোটিনের ঘাটতি হয়নি। মানুষ সুস্থ ছিল। সবকিছু বন্ধ হয়ে থাকলেও আমরা ডিম-দুধ-মাংস মানুষের ঘরে পৌঁছে দিতে পেরেছি। সে সময় ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্র করে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ডিম-দুধ-মাংস বিক্রি করেছে। সেটা ছিল অভাবনীয় সাফল্য।
এখন রমজানে মানুষ কম দামে মাংস খেতে পারে। ওই সময় ৫০০ টাকায় মাংস বিক্রি করেছি। ব্যবসায়ীরা আমাদের বাধা দিয়েছে। তারা বলেছে, এতো কম দামে মাংস বিক্রি করলে তাদের ব্যবসা শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু মানুষ স্বল্পমূল্যে মাংস খেতে পেরেছে।
তিনি বলেন, এ খাতের আরও একটি বড় সাফল্য রয়েছে। এ সেক্টর দেশের বেকারত্ব সমস্যা অনেকটা দূর করেছে। খামারিরা এখন বড় বড় উদ্যোক্তা হয়েছেন। এখন আর আমাদের গ্রামে টাকা পাঠাতে হয় না। আমরা রপ্তানি বাড়াতে প্রতিটি উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ পশু হাসপাতালের করে দিয়েছি। পশু এখন হাসপাতালে আসবে না, ডাক্তার তার কাছে যাবে। আমরা এ খাতের ফিডে কর রেয়াত দিয়েছি। কেউ খামার করতে চাইলে তাদের স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।
মন্ত্রী বলেন, এখন ব্রয়লার মুরগি নিয়ে একটি চক্র অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি বলতে চাই, ব্রয়লার ক্ষতিকর না। এটি নিয়ে কোন সংশয় নেই। দুধ ডিম সব আন্তর্জাতিক মানের ল্যাবে পরীক্ষা করছি আমরা। এগুলোতে কোন সমস্যা নেই।
প্রাণীজ আমিষের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং প্রাপ্যতা সহজলভ্য করে তুলতে ‘স্মার্ট লাইভস্টক, স্মার্ট বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ বলেন, প্রাণীজ সম্পদের উন্নয়নে বেসরকারি সংগঠনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাদের মাধ্যমে সরকার এই সেক্টরের উন্নত করছে। এই সেক্টরের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সকল সহায়তা দেয়া হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ.টি.এম. মোস্তফা কামাল। ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ইমরান হোসেন, প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী ২০২৩ এর শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক ডা. মো. এমদাদুল হক তালুকদার।