ছাত্র অধিকার পরিষদের পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ‘ছাত্রলীগের’ হামলার বিচার চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। আজ বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে গিয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের ৯ জন নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ জমা দেন।
প্রক্টরের সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ দেওয়ার পর বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘আমরা এক সপ্তাহের মধ্যে এ হামলার বিচার চেয়েছি। এ বিচার যদি তিনি না করেন, আমি সংগঠনের সর্বোচ্চ প্রতিনিধি হিসেবে এই প্রক্টর কার্যালয়ের সামনে এসে নিজের গায়ে আগুন জ্বালিয়ে আত্মহত্যা করব।’
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ঢাবির কবি জসীমউদ্দিন হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাশেদুজ্জামান রনি, বিজয় একাত্তর হলের সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিরুল ইসলাম সাকিব, শাহ নেওয়াজ বাবু, সদস্য মুনাফ প্রান্ত, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের সাংগাঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার শহিদ শুভ ও এম আর জিহাদ, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের সাংগাঠনিক সম্পাদক তানভীর আলম চৌধুরী, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফরিদ জামান, ছাত্রলীগ নেতা ইবনে আব্দুল হক রাব্বিসহ ৮০-১০০ জন তাদের ওপর নারকীয় হামলা চালায়। হামলার ভিডিওচিত্র বিশ্লেষণ করে অভিযুক্তদের হামলা করতে দেখা যায়।
বিন ইয়ামিন মোল্লা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ছাত্র অধিকার পরিষদের পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বেলা সাড়ে ১০টার দিকে টিএসসির গেটে আসলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রবেশে বাধা প্রদান করে। একপর্যায়ে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে এবং তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তারা রাস্তার কংক্রিটের ডিভাইডার ব্লক (গার্ডার) ফেলে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্র অধিকার পরিষদের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ইউনুস সানির পা ভেঙে ফেলে।
বিন ইয়ামিন মোল্লা আরও উল্লেখ করেন, তিনিসহ পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহির ফয়সাল, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি ফয়সাল রকিসহ ২৫ জনেরও বেশি নেতাকর্মীকে রাস্তায় ফেলে গুরুতর জখম করে এবং মিলন চত্বরে পুলিশের হাত থেকে লাঠি কেড়ে নিয়ে নারকীয় হামলা চালায় যা বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ের গণমাধ্যমগুলোতেও প্রচার হয়েছে। তিনি ছাত্রলীগের সব নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অভিযোগপত্রে অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি, প্রমাণ সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ পাশাপাশি শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে ছাত্র সংগঠনের ভূমিকা রাখা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অভিযোগপত্র দেওয়ার সময় ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব, ঢাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আসিফ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক আহনাফ সাঈদ খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুসরাত তাবাসসুমসহ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।