মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণে আসছে নীতিমালা

1
195
মোটর সাইকেল যান

মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা করছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। পরিবহন বিভাগের যুগ্ম সচিব আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের কমিটি ইতোমধ্যে তৈরি করেছে ‘মোটরসাইকেল চলাচল নীতিমালা-২০২৩’ এর খসড়া। এতে বলা হয়েছে, রাজধানীতে মোটরসাইকেল ৩০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে চালানো যাবে না। ঈদ ও উৎসবের সময় মহাসড়কে চলাচল করতে পারবে না মোটরসাইকেল।

রাজধানীতে মোটরসাইকেলের গতি ৩০ কিলোমিটার নির্ধারিত হলে, অন্য উচ্চগতির গাড়ির সঙ্গে একই লেনে চললে দুর্ঘটনা ঝুঁকি আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা রয়েছে। গতিসীমা কীভাবে কার্যকর করা হবে- এ প্রশ্নে যুগ্ম সচিব আনিসুর রহমান বলেন, পুলিশের কাছে গতি নির্ধারণের যন্ত্র থাকবে। গতিসীমা লঙ্ঘনের শাস্তি সড়ক পরিবহন আইনে নির্ধারণ করা আছে।

তিনি বলেন, খসড়া নীতিমালায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ নয়, গতি কমানোর দিকে জোর দেওয়া হয়েছে। মোটরসাইকেলে বয়স্ক ও শিশুকে যাত্রী না করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিএসটিআই অনুমোদিত উন্নতমানের হেলমেটসহ অন্যান্য নিরাপত্তা সরঞ্জাম চালককে পরার কথা বলা হয়েছে। তবে বিষয়টি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। খসড়া চূড়ান্ত করতে অংশীজনের সঙ্গে সভা হবে। এরপর মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর তা কার্যকর হবে। সড়ক পরিবহন আইনে এবং বিধিমালায় গাড়ির গতি নির্ধারণ করা নেই।

সড়ক পরিবহন বিধিমালার ১২৬ ধারায় বলা হয়েছে, সড়কভেদে সরকার প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে গতি নির্ধারণ করবে। স্থানীয় সরকারি প্রতিষ্ঠান ও কর্তৃপক্ষও গতি নির্ধারণ করতে পারে। মহাসড়কে সর্বোচ্চ নির্ধারিত গতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার। রাজধানীর ক্ষেত্রে সড়কভেদে তা ৩০ থেকে ৬০ কিলোমিটার। আনিসুর রহমান জানান, সড়ক ও যানবাহনভেদে গতি নির্ধারণের কাজ চলছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি, রোড সেফটি ফাউন্ডেশনসহ বেসরকারি সংস্থাগুলো সড়ক দুর্ঘটনা যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করছে, সে অনুযায়ী দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির প্রায় ৪০ শতাংশের সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংশ্নিষ্টতা রয়েছে। সারাদেশে নিবন্ধিত ৫৬ লাখ ২৮ হাজার যানবাহনের মধ্যে ৪০ লাখ ৩৯ হাজার মোটরসাইকেল। গত ১১ বছরে সারাদেশে চারগুণ হয়েছে মোটরসাইকেলের সংখ্যা। ২০২২ সালে নতুন ৫ লাখ ৬ হাজার ৯১২টি মোটরসাইকেল নিবন্ধিত হয়েছে। তবে রাজধানীতে মোটরসাইকেল বাড়ার হার আরও বেশি। ঢাকায় ১১ বছরে পাঁচগুণ হয়েছে এই দ্বিচক্রযানের সংখ্যা। ঢাকায় নিবন্ধিত ১৯ লাখ ৬৬ হাজার যানবাহনের ১০ লাখ ২৩ হাজারই মোটরসাইকেল।

দুর্ঘটনা রোধে গত জুনে সড়ক ও জনপথ অধিপ্তর (সওজ) মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধের প্রস্তাব করেছিল। প্রস্তাবটি সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের সভায় উঠলেও সরকারের অনুমোদন পায়নি। সড়ক পরিবহন বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, মোটরসাইকেল উভয় সংকট তৈরি করেছে। বিদেশি নামিদামি কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে কারখানা তৈরি করে মোটরসাইকেল উৎপাদন করছে।

বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে সরকার তাদের কর ছাড় দিয়েছে। এতে মোটরসাইকেলের দাম কমেছে। সড়কে মোটরসাইকেল বাড়ছে। মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ করলে, বিদেশি বিনিয়োগের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। মোটরসাইকেল উৎপাদকরা সড়ক পরিবহন সচিবের সঙ্গে একাধিকবার দেখা করে তাঁদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।

1 মন্তব্য

  1. জনাব, 126 সিসির কম অর্থ্যাৎ 55 সিসি হতে 125 সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেলগুলি ক্রয়কারীগন দুটি কারণে মোটরসাইকেল কিনেছেন – 1.আর্থিক সমস্যার কারনে 2. কম তেলে অধিক মাইলেজ পাওয়া যায় বলে। এদেশে তেলের যে দাম তাতে কম সিসিরগাড়ী চালানেওয়ালারা সংখ্যায় অনেক। কম সিসির বাইক চালানেওয়ালারা বেশির ভাগই হয়ে থাকে চাকরীজীবী, ব্যবসায়ী, শিক্ষক ও কম আয়ের লোক ইত্যাদি। তারা তাদের খুব প্রয়োজনেই মোটরসাইকেল ব্যবহার করে থাকেন এবং সাবধানে। কারণ তারা জানেন একটি দূর্ঘ টনা একটি পরিবারের জন্য কতখানি কস্টের হয়। মোটরসাইকেল দূর্ঘ টনার কারন দেখতে গেলে- দেখা যায়,1. যারা মোটরসাইকেল কিনেছেন শুধু সখে বা ইনজয় করতে বা মোটরসাইকেল চালানোর অভিজ্ঞতা সম্পন্ন নয় এমন যুবক শ্রেণী বা কম বয়সী ছেলেরা, তাদের বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালানো। 2. বাস, ট্রাক, অন্যান্য বড় গাড়ী যেগুলো মহাসড়কে বেপরোয়া গতিতে চলে এবং ছোট গাড়ী গুলোকে পাত্তা না দেওয়ার মনমানসিকতা থাকে ও আইন বহির্ভূত ওভারটেইকিং, আগে যাওয়ার জন্য পারাপারি ইত্যাদি। এ জন্য কম সিসির মোটরসাইকেল চালানেওয়ালাদের পক্ষ হতে উক্ত খসড়া মোটরসাইকেল নীতিমালা -2023 প্রয়োগের ক্ষেত্রে বিজ্ঞ কমিটিগণদের সদয় বিবেচনার নিমিত্তে কম সিসির মোটরসাইকেল মহাসড়কে না চালানোর নীতিমালা প্রণয়ন না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হচ্ছে। এটা হলে অনেক মধ্যবিত্ত ভদ্রজন তাদের প্রতিদিন কার কর্মজীবন দূর্বিসহ হয়ে উঠবে। এছাড়া করোনা সংক্রান্ত বিষয় ও আমাদের মাথায় রাখা উচিত। করোনার কারনেও অনেকে কম সিসির মোটরসাইকেল গুলো কিনেছেন এবং নির্বিঘ্নে অফিসে যাতায়াত করছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.