বীজ কোম্পানিগুলোকে সততার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, নিম্নমানের বীজের বিষয়ে এখনও অনেক অভিযোগ আসে, মাঠ থেকে খবর পাই যে, চারা অর্ধেক গজায়নি। এখনো কিছু কোম্পানির প্রতারণা করার প্রবণতা আছে। অনেক সময় কৃষকেরা নিম্নমানের বীজ কিনে প্রতারিত হয়। এতে একদিকে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, অন্যদিকে উৎপাদন ব্যাহত হয়।
শনিবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ সিড কংগ্রেসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কৃষি মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সিড এসোসিয়েশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বীজের মানের বিষয়ে কৃষকের শতভাগ আস্থা অর্জন করতে হবে। কৃষি উৎপাদনের মূল উপকরণ হলো বীজ। ভালো ফলন ও উৎপাদনশীলতার জন্য মানসম্পন্ন বীজ অপরিহার্য। কাজেই, বীজের মানের বিষয়ে কোনোরকম ছাড় দেওয়া হবে না।
এ সময় তিনি মানসম্পন্ন বীজ নিশ্চিত করতে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদেরকে কঠোরভাবে মনিটরিং করার নির্দেশ প্রদান করেন। পাশাপাশি কর্মকর্তাদেরকে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে নির্দেশ দেন তিনি।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার সার, বীজসহ কৃষি উপকরণে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করেছে। বিগত ১৪ বছরে সার-বীজের কোনো সংকট হয়নি। বিশ্বব্যাপী সারের দাম চারগুণ বৃদ্ধি পেলেও সরকার দেশে সারের দাম বাড়ায়নি; বরং আগের চেয়ে চারগুণের বেশি ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছে। বীজের দামও বাড়ায়নি। কৃষি উৎপাদন বজায় রাখতে আগামীতেও সার-বীজের দাম বাড়াবে না।
বিদেশ থেকে যেসব নতুন ফসলের বীজ দেশে আসছে সেগুলোর বিষয়ে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এসব জাত দেশের জন্য কতটুকু উপযোগী, কোনো রোগব্যাধি বা জীবাণু আছে কিনা, কৃষককে ক্ষতিগ্রস্ত করবে কিনা- এসব বিষয়ে শক্তভাবে খতিয়ে দেখতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার, গেস্ট অব অনার হিসেবে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জ্যান বেলি, এফএওর বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট সিম্পসন, এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক সিড এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মনিশ প্যাটেল, ইন্টারন্যাশনাল সিড ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি মাইকেল কেলার বক্তব্য দেন। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সিড এসোসিয়েশনের সভাপতি এম আনিস উদ দৌলা।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সাত্তার মণ্ডল বলেন, ভালো মানের বীজ দেওয়ার ফলে ইতোমধ্যে শতকরা ৮-১০ ভাগ ফলন বেড়েছে। আরো ভালো বীজ দিতে পারলে বছরে ধানের উৎপাদন ২১ লাখ টন বাড়ানো সম্ভব হবে।