তুরস্কের মানবিক ত্রাণবিষয়ক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সরবরাহ করা এক ভিডিওতে দেখা গেছে, ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে দেশটির দুর্যোগ ও জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলাসংক্রান্ত কর্তৃপক্ষের (এএফএডি) একজন কর্মী ছোট্ট শিশুটিকে বের করে আনছেন। পরে শিশুটিকে স্বাস্থ্যকর্মীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাঁরা শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
এ ঘটনা অন্য একজন উদ্ধারকর্মী তাঁর মুঠোফোনে রেকর্ড করে রাখেন। পরে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে প্রচার করা হয়। যদিও শিশুটি কিংবা ওই শিশুর মা-বাবার নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
এদিকে তুরস্ক ও সিরিয়ায় সোমবারের ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ২১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে দেশ দুটির সরকারি সূত্র ও চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত তুরস্কে ১৭ হাজার ৬৭৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আর সিরিয়ায় মারা গেছেন ৩ হাজার ৩৭৭ জন। দুই দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৫১।
ভূমিকম্পে তুরস্কের ১০টি ও সিরিয়ার ৪টি প্রদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তুরস্কের সরকারি হিসাবে, দেশটিতে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, এমন মানুষের সংখ্যা ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি। আর সিরিয়ায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক এল-মোস্তাফা বেনলামিল জানিয়েছেন, দেশটিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১ কোটির বেশি মানুষ।
তুরস্কে উদ্ধারকাজে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তীব্র ঠান্ডা, বৃষ্টি, যোগাযোগে বিপর্যয়সহ নানা সমস্যা। আশ্রয়, খাবার, পানি, জ্বালানি ও বিদ্যুতের অভাবে চরম দুর্দশায় রয়েছেন উপদ্রুত এলাকাগুলোর বেঁচে থাকা মানুষেরা। ফলে তাঁদের মধ্য থেকেও অনেকের মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
পাশের দেশ সিরিয়ার অবস্থা আরও খারাপ। দেশটির ভূমিকম্পকবলিত এলাকাগুলো সরকার ও বিদ্রোহী—দুই পক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহায়তা পৌঁছানো নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে সহায়তা নিয়ে জাতিসংঘের ছয়টি ট্রাক তুরস্ক সীমান্ত পার হয়ে সিরিয়ায় প্রবেশ করেছে। এটি দেশটির ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে পৌঁছানো প্রথম আন্তর্জাতিক সহায়তা।