চাকরি প্রত্যাশীদের সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল রোববার ঢাকা ও গাজীপুর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
তাঁরা হলেন- মো. কামরুজ্জামান, আবু রায়হান ওরফে রিয়াদ ও নাজির হোসেন। গ্রেপ্তারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারণা চক্রের সদস্য এবং কামরুজ্জামান তাদের প্রধান বলে দাবি করেছে ডিবি।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার প্রতারকদের কাছ থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সংসদ সচিবালয়, ভূমি অধিদপ্তর, যুব উন্নয়ন এবং সমাজসেবা অধিদপ্তরের ভুয়া সিল-স্বাক্ষর সম্বলিত বেশ কয়েকটি ভুয়া নিয়োগপত্র জব্দ করা হয়েছে। চক্রটি নিয়োগপত্রগুলো এত নিখুঁতভাবে তৈরি করেছে, যা প্রথম দেখে ভুয়া বোঝার উপায় নেই। কিন্তু পরে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চাকরিতে যোগদান করতে গিয়ে ভুক্তভোগীরা বুঝতে পারেন; তাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। এভাবে বহু মানুষকে ঠকিয়ে বিপুল টাকা আত্মসাৎ করেছে চক্রটি।
ডিবি জানায়, গ্রেপ্তার নাজির হোসেন পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল হাসপাতালের ওয়ার্ড-বয়। তার সঙ্গে ২০১৯ সালে পরিচয় হয় শেফালি নামে এক ভুক্তভোগীর। নাজির তাকে প্রস্তাব দেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে তার ঘনিষ্ট লোক আছে, টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেবেন।
পরে তিনি শেফালির সঙ্গে প্রতারক চক্রের হোতা কামরুজ্জামান, তার সহযোগী রিয়াদ এবং মোখলেছুর রহমান মুকুলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এভাবে ফাঁদে ফেলে শেফালির ভাগিনা ও দুই ভাতিজাকে ভুয়া নিযোগপত্র দিয়ে ৩১ লাখ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।
ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সাইফুর রহমান আজাদ বলেন, চক্রের মূলহোতা কামরুজ্জামানের বাড়ি ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে। ঢাকার মোহাম্মদপুরে গ্রাফিক্স আর্ট ইনস্টিটিউটে গ্রাফিক্স ডিজাইনে পড়ালেখা সম্পন্ন করেন তিনি। সেই সুবাদে তিনি গ্রাফিক্স ডিজাইনে দক্ষ। তিনি নিজেই ফটোশপের মাধ্যমে ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করেন। নিজেকে কখনও ইঞ্জিনিয়ার, কখনও সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার আত্মীয় পরিচয় দেন। চক্রের অপর সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।