নতুন সরকারের ১১ দফা জানালেন প্রধানমন্ত্রী

0
175
জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আগামী নির্বাচনে জিতলে নতুন সরকারের ১১ দফা পরিকল্পনার কথা সংসদকে জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার সংসদের বৈঠকে প্রশ্নোত্তরে তিনি বলেন, “২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ ভিশন ও রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়ন করা হবে।”

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী তাঁর প্রশ্নে আগামীতে সরকার গঠন করতে পারলে প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা কী হবে তা জানতে চান। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার ছিল ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’, সে সময় ‘২০৪১ সালে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’ ও ‘২১০০ সালের নিরাপদ ব-দ্বীপ’ পরিকল্পনার রূপরেখা প্রদান করা হয়েছিল।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘উন্নত বাংলাদেশের অভিযাত্রায় প্রথম ধাপ হিসেবে এরই মধ্যে আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় আসীন হয়েছি। বাংলাদেশ ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে এবং মাথাপিছু গড় আয় হবে পাঁচ হাজার ৯০৬ ডলারের উপরে এবং ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে একটি উন্নত দেশ যেখানে মাথাপিছু আয় হবে ১২ হাজার ৫০০ ডলারের বেশি।’

বর্তমানে বাংলাদেশে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০২৫ সালে প্রবৃদ্ধি হবে ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ, ২০৩১ সালে ৯ শতাংশ এবং ২০৪১ সালের লক্ষ্যমাত্রা ৯ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে।’

২০৩১ সালের মধ্যে দেশের চরম দারিদ্র্যের অবসান হবে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে দারিদ্র্য ৩ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা হবে।’

এজন্য দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারের ১১টি সংক্ষিপ্তসার সংসদে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বিস্তারিত পরিকল্পনা আগামী নির্বাচনি ইশতেহারের মাধ্যমে যথাযথ সময়ে প্রকাশ করা হবে।’

১১ দফা পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে আগামীতে সরকার গঠন করলে আওয়ামী লীগের ভিশন হবে ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ। স্মার্ট বাংলাদেশের ভিত্তি হবে স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি।

এজন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন ধরণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। রূপকল্প-২০৪১ ধারণ করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১; স্মার্ট ডেল্টা বিনির্মাণের ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’; ৯ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০২৬-২০৩০, ১০ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০৩১-২০৩৫, একাদশ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০৩৬-২০৪০, ইত্যাদি।

কৃষি যান্ত্রীকীকরণের মাধ্যমে উৎপাদন পরিচালনা ও বৃদ্ধি করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। ক্ষুদ্র, কুটির, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্প গড়ে তোলা হবে। সড়ক, নৌ, রেল ও বিমানপথে যাতায়াতের গৃহীত সব প্রকল্প শেষ করা হবে বলে জানান তিনি। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ নিশ্চিত করে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে গুরুত্ব দিয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে বলে জানান সরকার প্রধান।

আগামীতে সরকার গঠন করতে পারলে ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন করে রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন নতুন বাজার সন্ধান এবং বাংলাদেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ডিজিটাল ডিভাইসের নিজস্ব বাজার সম্প্রসারণ করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

দ্বাদশ নির্বাচনে বিজয়ী হলে মানুষের মৌলিক চাহিদা অন্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও সবকিছু মিলিয়ে মানুষের চিকিৎসা তৃণমূল পর্যন্ত নিশ্চিত করে বাংলাদেশের সব মানুষের জীবন মান উন্নত করার পাশাপাশি প্রতিটি গ্রামকে শহরে রূপান্তর করে সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে বলে জানান শেখ হাসিনা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.