চলে গেলেন ফুটবলের রাজা পেলে

0
191
৮২ বছর বয়সে মারা গেলেন পেলে, রয়টার্স

অসুস্থ ছিলেন অনেক দিন ধরেই। বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যা তো ছিলই, কয়েক বছর ধরে এর সঙ্গে যোগ হয়েছিল কোলন ক্যানসার। এই মরণব্যাধির সঙ্গে লড়েও কেউ কেউ জিতে যান। পেলেও লড়েছেন কয়েক বছর। কিন্তু বয়সটা যে তাঁর পক্ষে ছিল না।

রেকর্ড তিন বার বিশ্বকাপ জিতেছেন পেলে

রেকর্ড তিন বার বিশ্বকাপ জিতেছেন পেলে
রয়টার্স

সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালের চিকিৎসকেরাও বুঝেছিলেন, সময় হয়ে গেছে। শুরু হয়েছিল উপশমসেবা দেওয়া। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় যার নাম ‘প্যালিয়েটিভ কেয়ার’, অনেকে বলেন ‘এন্ড অব লাইফ কেয়ার’। মানে কোনো রোগীর শরীর যখন স্বাভাবিক চিকিৎসায় সাড়া না দেয়, তখন তাঁর মৃত্যুর আগে পর্যন্ত ব্যথা আর কষ্ট উপশমের জন্য সেবা দেওয়া হয়। কে জানে হয়তো এ কষ্ট আর সয়ে যেতে চাননি পেলেও।

জীবনে কত ম্যাচ জিতেছেন, কত হেরে যাওয়ার ম্যাচে শেষ সময়ে গোল করে ফল পাল্টে দিয়েছেন। কিন্তু ক্যানসারের সঙ্গে এই ‘ম্যাচে’ লড়াই করেও শেষ পর্যন্ত হার মানলেন আজ, চলে গেলেন ৮২ বছর বয়সে। চলে গেলেন বেশির ভাগ মানুষের চোখে সর্বকালের সেরা ফুটবলার, চলে গেলেন ব্রাজিলিয়ানদের প্রিয় ‘ও রেই’ বা ‘রাজা’।

পেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় গত ১ ডিসেম্বর। বছর দুয়েক ধরেই তো এমন নিত্য হাসপাতালে যাওয়া-আসা তাঁর। ভক্তরা চিন্তিত হন, আবার সেই দুশ্চিন্তা পেলেই দূর করে দেন হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে টুইট করে বা ইনস্টাগ্রামে পোস্ট দিয়ে। এভাবেই চলছিল। এবারও ভক্ত-সমর্থকদের আশ্বস্ত করেছিলেন, প্রথমে তাঁর কন্যা, পরে তিনি নিজেই। কেলি নাসিমেন্তো বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে জানিয়েছিলেন, নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্যই হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে পেলেকে, অন্য কিছু ভাবার দরকার নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিত পেলের শারীরিক অবস্থার হালনাগাদ তথ্য দিয়ে গেছেন কেলি নাসিমেন্তো।

শেষ পর্যন্ত কাজে এলো না প্রার্থনা

শেষ পর্যন্ত কাজে এলো না প্রার্থনা
রয়টার্স

তারপরও ফুটবলের রাজার অসুস্থতার খবরে কি স্বস্তিতে থাকা যায়! এমনকি কাতার বিশ্বকাপে ব্রাজিলের ম্যাচে দলটির সমর্থকেরা গ্যালারি থেকে পোস্টার হাতে পেলেকে দ্রুত সেরে ওঠার জন্য শুভকামনা জানান। পেলের বিশাল জার্সি নিয়ে মাঠে আসেন তাঁরা।

এসব দেখেই হয়তো গত ২ ডিসেম্বর ইনস্টাগ্রামে পোস্ট দিয়ে শারীরিক অবস্থা ‘স্থিতিশীল’ জানিয়ে প্রার্থনা ও শুভকামনার জন্য ভক্তদের ধন্যবাদ জানান তিনবারের বিশ্বকাপজয়ী (১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৭০) এই ফুটবলার।

তারপরও পেলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে জানার পর থেকেই তাঁর জন্য প্রার্থনা চলছিল ফুটবল–বিশ্বে। কাতার বিশ্বকাপের কর্তৃপক্ষও শুভকামনা জানায় তাঁকে। বিশ্বকাপের ম্যাচ চলাকালে বহুতল ভবনে তাঁর বিশালাকার ডিজিটাল পোস্টার প্রদর্শন করা হয়। গতকালও ফুটবলের রাজাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ডিজিটাল পোস্টারে লেখা হয়, ‘সুস্থ হয়ে উঠুন, রাজা।’

কিন্তু আজ তাঁর মেয়ে দিলেন সেই খবরটি। রাজা আর ফিরলেন না সুস্থ হয়ে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.