উত্তরার দিয়াবাড়ি স্টেশনেও দেখতে কার্ডের মতো টিকিট হাতে নিয়ে এস্কেলেটরে উঠতেই টিকিট কাউন্টারের সেই লোকের কথাগুলো মনে হলো, এ তো দেশের চিরচেনা কোনো পরিবহনব্যবস্থার স্টেশন বা বন্দর নয়। ঝাঁ–চকচকে সব। ট্রেন কখন কোথায় থামছে, কোথায় যাচ্ছে, তা অনবরত কেউ একজন বলে যাচ্ছেন।
নিরাপত্তাবাহিনী ছাড়াও সেখানে রোভার স্কাউটের সদস্যরা আছেন। প্ল্যাটফর্মে বিএএফ শাহীন কলেজের জান্নাতুল ফেরদৌসও আজকের পালার দায়িত্বে আছে। সকাল থেকে দায়িত্ব পালন করছে, মেট্রোতে চড়ার প্রসঙ্গ জিজ্ঞেস করতেই তার উত্তর, ‘অবশ্যই চড়ব। আমরা এখানে ১০০ দিনের জন্য থাকব। এর মধ্যে সুযোগ তো আসবেই।’
কথা বলতেই বলতেই ট্রেন চলে এল। সময় তখন ১০টা ২৫ মিনিট। ট্রেনের ভেতরের ঝকঝকে সবুজ সিটগুলো ভুলিয়ে দেবে, এ দেশে চামড়া ওঠা বাসের সিট বলে কিছু আছে। বেশি সময় অপেক্ষায় রাখেনি মেট্রো। মিনিটখানেক বাদেই সে চলতে শুরু করে। স্টেশন থেকে বের হওয়ার পরেই মেট্রোর গতি টের পাওয়া যায়। আর ট্রেনটি কতটা গতিতে চলছে, তা আরও বোঝা যাবে পাশের লাইন দিয়ে যখন আরেকটি ট্রেন শাঁই করে চোখের পলকে ছুটে যাবে।
উত্তরা থেকে আগারগাঁও রুটে ট্রেন সরাসরি যাতায়াত করবে। মাঝের যতগুলো স্টেশন আছে, সেখানে থামছে না। তবে স্টেশনগুলো ক্রস করার সময় গতি কিছুটা কমানো হয়। বগির ভেতরে ভিড় নেই। এই মিনিট দশেকের যাত্রাতেই মানুষ এক বগি থেকে আরেক বগিতে যাচ্ছেন। সেলফি, ছবি, ভিডিও তো সঙ্গে আছেই। এদিক–ওদিক তাকাতে তাকাতেই ট্রেনটি আগারগাঁও এসে থামল। নেমে স্টেশন থেকে বের হতে গেলে টিকিটের কার্ডটি পাঞ্চ করার গেটে দিয়ে আসতে হবে। তবেই গেট খুলবে।
এ তো ছিল ফিরতি যাত্রার গল্প। এবার যাত্রার শুরুর অভিজ্ঞতা দিয়েই লেখা শেষ হোক। ভোর থেকে যারা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল, তাদের ডিঙিয়ে গণমাধ্যমকর্মী পরিচয়ে সকাল আটটার পর আগারগাঁও স্টেশনে ঢোকার সুযোগ হলো। দিয়াবাড়ি স্টেশনে যে অভিজ্ঞতা ছিল, সেই একই অভিজ্ঞতা এখানেও। দীর্ঘ লাইনে থেকেও ঢুকতে না পারা, টিকিটি কাটতে না পারা নিয়ে অসন্তোষ। অবশ্য হাতে টিকিট নিয়ে প্ল্যাটফর্মে পা দেওয়ার পর এগুলো আর মনে থাকে না।