সকালে শহরে ভোটার উপস্থিতি কম, শহরতলী উৎসবমুখর

রংপুর সিটি নির্বাচন

0
164
রংপুর সিটি নির্বাচন

রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনে আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ২২৯টি কেন্দ্রে বিরতিহীনভাবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ চলবে।

সকালে শহ‌রের ভোট‌কেন্দ্রগু‌লো‌তে ভোটার উপস্থিতি কম ছি‌ল। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়তে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। ভিন্ন চিত্র ছি‌ল শহরতলীর কেন্দ্রগু‌লো‌তে। আব্দুল ল‌তিফ বিদ্যালয় কে‌ন্দ্রে সকাল পৌ‌নে ১০টায় বেশ ভিড় ছি‌ল। একই অবস্থা চ‌ব্বিশ হাজা‌রি ভোট কে‌ন্দ্রে। এখা‌নে পুরুষ ও ম‌হিলা ভোটার‌দের উপ‌স্থি‌তি ছি‌ল বেশ।

ভোট দিতে আসা আব্দুর রহমান বলেন, ইভিএম নিয়ে মনে ভয় ছিল। কিন্তু কোনো ঝামেলা ছাড়াই ভোট দিলাম। আশা করছি, ভালোভাবেই ভোট সম্পন্ন হবে।


অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন।

গতকাল সোমবার দুপুর থেকে ভোটকেন্দ্রগুলোতে নির্বাচনী সামগ্রী পৌঁছানো হয়।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিটি সাধারণ ভোটকেন্দ্রে একজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ দু’জন কনস্টেবল, দু’জন অস্ত্রধারী আনসার, ১০ জন আনসার-ভিডিপি’র সদস্যসহ মোট ১৫ জনকে মোতায়েন করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ৮৬টি ভোটকেন্দ্রে একজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ তিনজন কনস্টেবল, দু’জন অস্ত্রধারী আনসার ও ১০ জন আনসার-ভিডিপি’র সদস্যসহ মোট ১৬ জনকে মোতায়েন করা হয়েছে। নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে ১১ প্লাটুন বিজিবি, র‍্যাবের ১৭টি টিম, পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে মোবাইল ফোর্স, ১১টি স্ট্রাইকিং ফোর্স ও ৬টি রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স কাজ করছে। এছাড়া নির্বাচনে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডের জন্য ৩৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১৬ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন। এর পাশাপাশি ২২৯টি কেন্দ্রের সবগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার সঙ্গে সঙ্গে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে মনিটরিং করা হচ্ছে।

নির্বাচনের প্রধান আকর্ষণ মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে। রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া সংরক্ষিত ১১টি ওয়ার্ডে ৬৮ এবং ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৮৩ জন কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।

মেয়র প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া (নৌকা), জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আমিরুজ্জামান পিয়াল (হাতপাখা), বাংলাদেশ কংগ্রেসের আবু রায়হান (ডাব), খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল (দেয়াল ঘড়ি), জাসদের শাফিয়ার রহমান (মশাল), জাকের পার্টির খোরশেদ আলাম (গোলাপ ফুল), স্বতন্ত্র প্রার্থী লতিফুর রহমান মিলন (হাতি) ও মেহেদী হাসান বনি (হরিণ)।

রংপুর সিটি নির্বাচন

রংপুর সিটি করপোরেশনে ৩৩টি ওয়ার্ডের ২২৯টি কেন্দ্রের ১৩৪৯টি ভোটকক্ষে ৪ লাখ ২৬ হাজার ৪৭০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। তাদের মধ্যে একজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারও রয়েছেন।

নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন বছর শুধু নির্বাচনী বছরই নয়; দেশে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবেও চিহ্নিত হতে পারে। ২০২৩ সাল নির্বাচন কমিশন, সরকার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন, রাজনৈতিক দল সবার জন্য একটি পরীক্ষার বছর। কারণ ২০২৪ সালের শুরুতে জাতীয় নির্বাচন হলেও সব প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে ২০২৩ সালেই।

একটি অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংশ্নিষ্ট সবার আন্তরিকতা ও নিরপেক্ষতার ওপরই ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। তারা বলছেন, রংপুরের নির্বাচনের মাধ্যমেই ইসি ও সরকারের নিরপেক্ষতা যাচাই হতে পারে।

এদিকে সিটি নির্বাচন উপলক্ষে রংপুরে নির্বাচনী এলাকায় সরকারি-বেসরকারি অফিসে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.