মেসির পেনাল্টি মিসের পরও দারুণ জয়ে শেষ ষোলোয় আর্জেন্টিনা

আর্জেন্টিনা ২: ০ পোল্যান্ড

0
225
দারুণ জয়ে শেষ ষোলোয় আর্জেন্টিনা, ছবি: রয়টার্স

ম্যাচের আগে লিওনেল মেসির পেনাল্টি ঠেকানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন পোলিশ গোলরক্ষক ভয়চেক সেজনি। সেই কথা রেখেছেন এই গোলরক্ষক। ৩৯ মিনিটে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠিকই মেসির শট ঠেকালেন এই গোলরক্ষক। শুধু মেসির পেনাল্টিই নয়, প্রথমার্ধে একের পর আর্জেন্টাইন প্রচেষ্টা একাই ঠেকিয়েছেন পোলিশ গোলরক্ষক। তবে আর কতক্ষণ! দ্বিতীয়ার্ধে পেরে ওঠেননি। তবে হেরেও আর্জেন্টিনার সঙ্গী হয়েছে পোল্যান্ড। তাই অন্য ম্যাচে সৌদি আরবকে ২–১ গোলে হারিয়েও লাভ হয়নি মেক্সিকোর।

গোলের পর হুলিয়ান আলভারেস

গোলের পর হুলিয়ান আলভারেস
ছবি: রয়টার্স

ম্যাচের শুরুতেই সুযোগ আসে আর্জেন্টিনার সামনে। যদিও কাছাকাছি গিয়ে অল্পের জন্য গোলের দেখা পায়নি তারা। তবে পরের মুহূর্তে আক্রমণ গিয়ে আর্জেন্টিনার ডিফেন্স কাঁপায় পোল্যান্ড। ক্রিস্তিয়ান বিয়েলিকের শট বাধাগ্রস্ত হয় আর্জেন্টাইন ডিফেন্সে।

মাঝ মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ছোট ছোট পাসে আক্রমণ তৈরির চেষ্টা করছিল আর্জেন্টিনা। ৭ম মিনিটে আগের ম্যাচে মেক্সিকোর বিপক্ষে করা গোলের মতোই ডি-বক্সের বাইরে থেকে শট নেন মেসি। তবে আগে পোলিশ গোলরক্ষক ভয়চেক সেজনি সতর্ক থাকায় বিপদে পড়তে হয়নি পোল্যান্ডকে।

ম্যাচের প্রথম ১৫ মিনিট পোলিশ রক্ষণের আশপাশে থেকেই হুমকি তৈরির চেষ্টা করছিল আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডরা। তবে আলবিসেলেস্তাদের আক্রমণ পোলিশ রক্ষণ ভাঙার জন্য যথেষ্ট ছিল না। ১৭ মিনিটে মার্কোস আকুনিয়ার শট যায় বারের ওপর দিয়ে।

২১ মিনিটে ফ্রি কিক পেয়েছিল পোল্যান্ড। তবে তা আর্জেন্টিনাকে বিপদে ফেলার মতো ছিল না। তবে এমন দুই একটা আচমকা সুযোগ তৈরি ছাড়া ম্যাচে প্রথমার্ধের বেশির ভাগ সময়েই বল ছিল আর্জেন্টিনার দখলে। আর্জেন্টিনার আক্রমণাত্মক ফুটবলের সামনে পোল্যান্ডকে বেশ নিচে নেমে এসেই রক্ষণ সামলাতে হচ্ছিল।

তবে নিজেদের দুর্গ সামলানোর কাজটা বেশ ভালোভাবেই করছিল তারা। ম্যাচের ২৮ মিনিটে হুলিয়ান আলভারেজকে ঠেকিয়ে দেন সেজনি। একই আক্রমণে পরের মুহূর্তে আকুনিয়ার জোরালো শট যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে। ৩৩ মিনিটে আনহেল দি মারিয়ার কর্নার থেকে নেওয়া শট সেজনি দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে না দিলে সেটি প্রায় পোস্টের ভেতর ঢুকেই গিয়েছিল।

প্রথমার্ধে মেসির পেনাল্টি ঠেকান সেজনি

প্রথমার্ধে মেসির পেনাল্টি ঠেকান সেজনি
ছবি: রয়টার্স

একটু পর দারুণ এক থ্রু বল নিয়ে পোলিশ রক্ষণে ঢুকে পড়েছিলেন আলভারেজ। তবে এবারও পোল্যান্ডের ত্রাতা হয়ে গোল ঠেকিয়ে দেন সেজনি। সেই আক্রমণে সেজনির ফাউলের শিকার হন মেসি। ভিএআর দেখে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। তবে পেনাল্টিতে গোল করতে ব্যর্থ হন মেসি নিজেই। পেনাল্টি মিস যেন আরও তাতিয়ে দেয় আর্জেন্টিনাকে। বিরতির আগ পর্যন্ত একের পর এক আক্রমণে পোলিশ রক্ষণ কাঁপিয়ে দেয় তারা। তবে সেজনি-প্রাচীর ভেদ করে জালের ঠিকানা খুঁজে নিতে পারেনি আর্জেন্টিনার আক্রমণভাগ।

বিরতির পর অবশ্য আর খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি আর্জেন্টিনাকে। প্রথম মিনিটে সেজনি থিতু হওয়ার আগেই নাহুয়েল মলিনার পাস থেকে বল পেয়ে লক্ষ্যভেদ করেন ম্যাক অ্যালিস্টার। একটু পরই অবশ্য গোল শোধ করে দিতে পারত পোল্যান্ড। তবে ফ্রি কিক থেকে পাওয়া বলে গ্লিকের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দারুণ এক আক্রমণে মেসি একাই বল নিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন আর্জেন্টাইন রক্ষণে। তবে শেষ পর্যন্ত বলের নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি।

গোলের পর ম্যাক অ্যালিস্টার

গোলের পর ম্যাক অ্যালিস্টার
ছবি: রয়টার্স

এগিয়ে থেকেও আর্জেন্টিনা রীতিমতো আক্রমণের ঝড় তুলেছিল। ব্যবধান ২-০ করার সুযোগও এসেছিল সেই ম্যাক অ্যালিস্টারের সামনে। যদিও এবার আর ফাঁকি দিতে পারেননি সেজনিকে। তবে ৬৮ মিনিটে আবার ধসে পড়ে পোলিশ দেওয়াল। দুই ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়ান আলভারেজ।

ম্যাচের বাকি সময়টাও আর্জেন্টাইন ঝড়ের কবলে পড়ে পোলিশ রক্ষণের কোণঠাসা হয়ে থাকার গল্প। এমনকি পোল্যান্ডকে চেষ্টা করার সুযোগটাও দেয়নি আকাশি–নীলরা।

হাসনাত শোয়েব

ঢাকা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.