এনটিআরসিএর ৭০ হাজার শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি যেকোনো সময়

0
200
মোছাব্বের হোসেন, ঢাকা

এনটিআরসিএতে শিক্ষক নিয়োগের সঙ্গে যুক্ত একজন কর্মকর্তা বলেন, তাঁরা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রাথমিকভাবে শূন্য পদের যে তালিকা পান, তাতে বেশ কিছু ভুল থাকে। যেমন কোনো প্রতিষ্ঠানে বাংলা বিষয়ের শিক্ষক দরকার নেই অথচ বাংলার শিক্ষক চাওয়া হয়েছে। আবার কোনো প্রতিষ্ঠানে তিনজন শিক্ষক দরকার, তারা পাঁচজন শিক্ষক চেয়ে আবেদন করেছে। আবার পদ খালি নেই, এমন প্রতিষ্ঠান শিক্ষক চেয়েছে।

এসব বিষয় এলে এনটিআরসিএ তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে হিমশিম খায়। আবার অনলাইনেও অনেকে তথ্য পূরণে ভুল করে। এ জন্য নিজ নিজ অধিদপ্তরকে প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্যগুলো যাচাই করতে বলা হয়েছে। এতে সমন্বয়ের কাজে সুবিধা হয়।

এনটিআরসিএ নিয়োগ শাখা থেকে জানা গেছে, তিন প্রতিষ্ঠান থেকে যাচাই করা তালিকা এনটিআরসিএতে পৌঁছেছে। মাদ্রাসা অধিদপ্তরের শূন্য পদের তালিকার বিষয়ে জানতে চাইলে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ শামসুজ্জামান বলেন, ‘এনটিআরসিএ আমাদের ৩৭ হাজার ৬৬৪ জন শিক্ষকের নিয়োগের তথ্য পাঠিয়েছিল।

যাচাই করার পর তথ্যে মিল না থাকা বা অন্যান্য কারণে ১ হাজার ১০২ জনের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগের জন্য ৩৬ হাজার ৫৬২ জনের নামের তালিকা পাঠানো হয়েছে।’

মাউশি বেসরকারি স্কুল ও কলেজের শূন্য পদের তালিকা যাচাই করার কাজ করে গত সপ্তাহে। এরপর শূন্য পদের তালিকা এনটিআরসিএতে পাঠায়। সেখানে যাচাই-বাছাই শেষে কত পদ ঠিক আছে জানতে চাইলে মাউশির নিয়োগ শাখার একজন কর্মকর্তা জানান, স্কুল ও কলেজ মিলে ৩২ হাজার ৫০০ পদ ঠিক আছে, যার তালিকা তাঁরা এনটিআরসিএতে পাঠিয়েছেন।

চাকরিপ্রার্থীদের খরচ কমাতে এবার প্রথম অনলাইনে প্রার্থীরা পছন্দের ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্বাচন করার সুযোগ পাচ্ছেন। এসব প্রতিষ্ঠানে সুযোগ না পেলে অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ রাখা হচ্ছেএনটিআরসিএ নিয়োগ শাখার একজন কর্মকর্তা

কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এক হাজার পদের তালিকা তারা পেয়েছিল, এর মধ্যে প্রায় ১ হাজার পদ নির্দিষ্ট করে এনটিআরসিএতে পাঠানো হয়। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে মোট কত পদ পাওয়া গেছে জানতে চাইলে এনটিআরসিএর একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, সব মিলে ৭০ হাজার ৯৫টি শূন্যপদ পাওয়া গেছে। এগুলো আরও যাচাই করার সুযোগ আছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান মো. এনামুল কাদের খান বলেন, ‘তিন প্রতিষ্ঠান যাচাই-বাছাই করার পর আমরা শূন্য পদের তালিকা পেয়েছি। এগুলো আরও বাছাই করা হতে পারে। এ ছাড়া গণবিজ্ঞপ্তি জারি করার অনুমতি চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুমতি চেয়ে গত সপ্তাহে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠি পেলেই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অনলাইনে আবেদন, কমছে ফি

এনটিআরসিএর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আবেদন করার ক্ষেত্রে দুই দফায় টাকা নেওয়া হয়। একটি হচ্ছে সনদ পাওয়ার জন্য। এ জন্য আবেদনের শুরুতে ৩৫০ টাকা নেওয়া হয়। আরেকটি হচ্ছে পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়ে সনদ পাওয়ার পর পছন্দের প্রতিষ্ঠানে আবেদন করার সময়।

সে সময় প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদনের জন্য ১০০ টাকা করে ফি নেওয়া হতো। চাকরিপ্রার্থী যত ইচ্ছা তত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারতেন। কেউ ৫০টি প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলে তাঁকে দিতে হতো পাঁচ হাজার টাকা।

তবে এবার এনটিআরসিএ সনদ পাওয়ার পর চাকরিপ্রার্থীদের পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদনের নিয়মে কিছুটা বদলের সুপারিশ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী এবার একজন প্রার্থী সনদ পাওয়ার পর সর্বোচ্চ ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারবেন। আগের নিয়মে এ জন্য তাঁর খরচ হওয়ার কথা ছিল চার হাজার টাকা।

কিন্তু এবার তা কমিয়ে এক হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এখানেই শেষ নয়। আবেদনের নিচে লেখা থাকবে ‘পছন্দের ৪০টি প্রতিষ্ঠানে সুযোগ না পেলে মেধার ভিত্তিতে যদি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ পান, তাহলে যোগ দেবেন কি না?’ সেখানে প্রার্থী ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বাছাই করতে পারবেন।

এ বিষয়ে এনটিআরসিএ নিয়োগ শাখার একজন কর্মকর্তা জানান, চাকরিপ্রার্থীদের খরচ কমাতে এবারই প্রথম অনলাইনে প্রার্থীরা পছন্দের ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্বাচন করার সুযোগ পাচ্ছেন। এসব প্রতিষ্ঠানে সুযোগ না পেলে অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ রাখা হচ্ছে।

মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলেই এসব নিয়ম কার্যকর করা যাবে। নতুন এ নিয়মকে সাধুবাদ জানিয়েছে এনটিআরসিএর সুপারিশ পাওয়া শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ শিক্ষক ফোরাম।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.