ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২৬৮ জনে দাঁড়িয়েছে আর নিখোঁজ ১৫০ জনেরও বেশি। এতে আহত হয়েছে আরও কয়েকশ মানুষ। এছাড়া ১৩ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জানিয়েছেন পশ্চিম জাভার গভর্নর রিদওয়ান কামিল।
সোমবার পশ্চিম জাভায় উৎপত্তি হওয়া ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পটি ৭৫ কিলোমিটার দূরের রাজধানী জাকার্তায়ও অনুভূত হয়। খবর বিসিসির।
দেশটির জিওফিজিক্স এজেন্সি (বিএমকেজি) জানিয়েছে, পশ্চিম জাভার সিয়ানজুড় শহরে ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীর ভূমিকম্পটির উৎপত্তি। এতে সুনামির কোনো সম্ভাবনা তৈরি হয়নি।
সিয়ানজুড় শহরের প্রশাসনিক প্রধান হারমান শুহেরমান কম্পাসটিভি-কে জানিয়েছেন, ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও বহুমানুষ চাপা পড়ে থাকায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ভূমিকম্পে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া পশ্চিম জাভার গ্রামগুলোতে আজ হেলিকপ্টার থেকে ত্রাণ ফেলা হবে। বহু মানুষ তাদের নিখোঁজ স্বজনদের খবর জানার জন্য শঙ্কিতভাবে অপেক্ষা করে আছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ভূমিকম্পে পশ্চিম জাভার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোর একটি চুগেনাং। এখানে অন্তত একটি গ্রাম ভূমিধসে চাপা পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বুধবারের পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টায় এই জেলাটিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।
ভূমিধসে সড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখানকার আরও দুটি জেলা বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। বুধবার এ দুটি জেলায়ও হেলিকপ্টার থেকে জরুরি ত্রাণ ফেলা হবে।
ভূমিধস পরিষ্কার করতে কর্তৃপক্ষ আরও ভারী মেশিনপত্র আনার প্রস্তুতি নিয়েছে। গণমাধ্যমে আসা ভিডিওগুলোতে লোকজনকে কোদাল, বেলচা ও শাবল দিয়ে মাটি সরানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে।
এছাড়া উদ্ধারকারী দলগুলোকে সাহায্য করার জন্য দুর্যোগস্থলে এক হাজারেরও বেশি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযানের প্রধান হেনরি আলফিয়ান্দি জানিয়েছেন, উদ্ধারকর্মীরা যত দ্রুত সম্ভব আটকাপড়াদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। ভূমিকম্পের তিন দিন পর আটকাপড়াদের জীবিত থাকার সম্ভাবনা বিবর্ণ হতে শুরু করেছে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।
সড়ক পথে যাওয়া সম্ভব না এমন দুটি গ্রামে হেলিকপ্টার থেকে খাবার ও পানি ফেলা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পশ্চিম জাভার গভর্নর রিদওয়ান কামিল জানান, পার্বত্য এলাকা হওয়ায় সেখানে ত্রাণ নিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে, কর্মকর্তারা খুব কষ্ট করে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোতে যাচ্ছেন।
বিশ্বের সবচেয়ে ভূমিকম্প প্রবণ দেশগুলোর একটি ইন্দোনেশিয়া। এখানকার উপকূলবর্তী সাগরগুলোতে নিয়মিতভাবে শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়। কিন্তু অল্প গভীরে উৎপত্তি হওয়া সোমবারের ভূমিকম্পটি ঘনবসতিপূর্ণ একটি এলাকায় আঘাত হানে আর পরে আরও ১৬০টি পরাঘাত হয়। এতে দুর্বল কাঠামোর ওপর দাঁড়িয়ে থাকা বহু বাড়ি ধসে পড়ে আর অনেক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট জোকো উয়িদোদো সিয়ানজুরের দুর্গত এলাকাগুলো পরিদর্শন করে পুনর্নির্মাণ উদ্যোগে ভূমিকম্প নিরোধক বাড়ি তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন।