ভোরে হালকা কুয়াশার সঙ্গে ঠান্ডা বাতাস, রাত গভীর হলে শীতের অনুভূতি। বেশ কয়েকদিন ধরে আবহাওয়া এমনই। উত্তরাঞ্চলের কিছু এলাকায় তো রীতিমতো কাঁপানো শীত নেমে গেছে। সাধারণত ডিসেম্বরের আগে এমন শীতের অনুভূতি হয় না। এবার তা নভেম্বরের মাঝামাঝিতেই হাজির হয়ে গেছে। তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি শীতলতম মাস হলেও এবার সময়ের চেয়ে এগিয়ে চলেছে আবহাওয়াচক্র। নভেম্বরের মধ্যভাগের পরেই নেমে গেছে শীত। আর ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে জেঁকে বসবে। আগামী মাসের মাঝামাঝিতে একটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের বেশিরভাগ এলাকার তাপমাত্রা এক সপ্তাহের ব্যবধানে এলাকাভেদে ৫ থেকে সর্বোচ্চ ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমেছে। উত্তরের কিছু এলাকায় সন্ধ্যার পর ঠান্ডা থেকে বাঁচতে শীতের কাপড় পরতে হচ্ছে। ডিসেম্বর-জানুয়ারির মতো সড়ক ও নৌপথে চলতে বাধ সাধছে কুয়াশা। শহরে কুয়াশার সঙ্গে ধুলা যোগ হয়ে দৃষ্টিসীমা ঝাপসা করে দিচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন ১৩.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। থার্মোমিটারের পারদ ঢাকায় ১৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, ডিসেম্বরে পুরো শীতের তীব্রতা থাকবে। এবার বাংলাদেশে শীতকাল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দীর্ঘ হবে।
আবহাওয়াবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, যে বছর লা নিনা থাকে, সে বছর প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝবরাবর তাপমাত্রা বেড়ে একটি উষ্ণ রেখা তৈরি হয়। আর বাতাস পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে বয়ে যায়। এতে উষ্ণ বাতাস ও পানি প্রশান্ত মহাসাগর থেকে ভারত মহাসাগর হয়ে বঙ্গোপসাগরে চলে আসে। লা নিনার এ ধরনের আচরণের ফলে বাংলাদেশ, ভারত, অস্ট্রেলিয়াসহ বিস্তৃত অঞ্চলে শীতকালে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কম থাকে, ফলে শীত বেশি পড়ে।
এল নিনো ও লা নিনা শব্দ জলবায়ুর দুটি ধরণ। এতদিন ধরে ভারতীয় জলবায়ুর ওপর এল নিনো ধরণ সক্রিয় ছিল। এল নিনোর সময়ে উষ্ণ সামুদ্রিক জলস্রোতের প্রভাব পড়ে। আর লা নিনার সময়ে শীতল সমুদ্র স্রোতের প্রভাব পড়ে।
এদিকে চলতি মাসে বঙ্গোপসাগরে আরেকটি লঘুচাপের আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। পাঁচ দিন আগেই একটি লঘুচাপ তৈরি হয়েছিল, যা এখন গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে বলে জানালেন আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক।