জাতিসংঘের বৈশ্বিক উন্নয়ন সংস্থার প্রধান বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের তালিকায় খেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে ৫৪টি দেশ রয়েছে। যদি সুদের হার আরও বেড়ে যায়, ঋণ নিতে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয়, বিদ্যুৎ ও খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পায়, তবে অনিবার্যভাবে কিছু দেশ ঋণ পরিশোধ করতে পারবেই না।’
তিনি বলেন, এটি একটি বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি করবে। শ্রীলঙ্কার (অর্থনৈতিক সংকটে অভ্যন্তরীণ অসন্তোষের মধ্যে পড়ে গেছে) দিকে দেখুন। দেশটির এ অবস্থার পেছনে সব ধরনের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কারণ ক্রিয়াশীল ছিল।
স্টেইনার বলেন, এ ধরনের যেকোনো ধরনের খেলাপি হওয়াটা জলবায়ু–সংকট সমাধানে আরও জটিলতার জন্ম দেবে। এটি নিশ্চিতভাবে জলবায়ু মোকাবিলায় গৃহীত পদক্ষেপের সহায়ক হবে না।
তিনি সতর্ক করে বলেন, ঋণের বিষয়ে সহায়তার পদক্ষেপ নেওয়া না হলে এসব দরিদ্র দেশ জলবায়ু–সংকট মোকাবিলা করতে পারবে না।
ইউএনডিপি–প্রধান বলেন, ঋণের বিষয়টি এখন অনেক উন্নয়নশীল দেশের জন্য এত বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে যে ঋণ–সংকট মোকাবিলা জলবায়ু পদক্ষেপকে ত্বরান্বিত করার পূর্বশর্ত হয়ে উঠেছে। এ জন্য দেশগুলোকে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের ভিত্তিতে নগদ অর্থ সরবরাহ প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, জলবায়ু–সংকট ঋণ সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলছে। একই সময় দেশগুলো চরম ভাবাপন্ন আবহাওয়ার ক্রমবর্ধমান ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলা করছে। ধনী দেশগুলো যে তহবিল প্রদানের অঙ্গীকার করেছিল, তা এখনো পায়নি দরিদ্র দেশগুলো। যদিও তারা ঝড়, বন্যা, খরা ও দাবদাহের ক্রমবর্ধমান হুমকি মোকাবিলা করছে।
স্টেইনার বলেন, দরিদ্র দেশগুলোকে বছরে সহায়তা হিসেবে ১০ হাজার ডলার প্রদানের দীর্ঘদিনের প্রতিশ্রুতি পূরণে উন্নত দেশের সরকারগুলো ব্যর্থ হলে, কিছু উন্নয়নশীল দেশের জাতিসংঘের জলবায়ু সংলাপ ত্যাগের ঝুঁকি আছে। গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে এবং চরম ভাবাপন্ন আবহাওয়ার প্রভাবের সঙ্গে মানিয়ে নিতে তাদের এই সহায়তা দেওয়ার কথা ছিল।
মিসরের শারম-আল শেখে বসেছে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক বৈশ্বিক সম্মেলন কপ ২৭। ৭ নভেম্বর শুরু হওয়া এ সম্মেলন চলবে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত। সম্মেলনে প্রায় ১০০ সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান অংশ নিচ্ছেন।