
বাণিজ্যিক মোটরযানের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল ২০ ও ২৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩০ বছর করাসহ আট দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক–শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে এসব দাবি মানতে সরকারকে সময় বেঁধে দিয়েছে সংগঠনটি। এ সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে আগামী ১২ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে ৭২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছে তারা।
আজ রোববার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানানো হয়। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক–শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
আট দফা দাবি হলো সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮–এর ৯৮ ও ১০৫ নম্বর ধারা সংশোধন করা। পুরোনো বাণিজ্যিক যানবাহনের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল (ইকোনমিক লাইফ) ২০ ও ২৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩০ বছর করা, সেটা না হওয়া পর্যন্ত পুরোনো গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান স্থগিত রাখা। বাজেটে বাণিজ্যিক যানবাহনের ওপর আরোপিত দ্বিগুণ অগ্রিম আয়কর কমিয়ে আগের মতো বহাল করা। মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন রাস্তা থেকে সরানোর জন্য সহায়ক হিসেবে বাণিজ্যিক রিকন্ডিশন যানবাহন আমদানির সময়সীমা ৫ থেকে বাড়িয়ে ১২ বছর করা। দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মালিকের জিম্মায় দেওয়ার বিধান কার্যকর করা। মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহনের জন্য স্ক্র্যাপ নীতিমালা প্রণয়ন করা। মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন ও অনুমোদনহীন হালকা যানবাহনের জন্য আলাদা লেন তৈরি করা। ড্রাইভিং লাইসেন্স ও নবায়ন দ্রুত দেওয়া এবং শ্রমিক ফেডারেশনের ১২ দফা বাস্তবায়ন করা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব সাইফুল আলম। তিনি বলেন, সম্প্রতি সরকার ২০ ও ২৫ বছর বয়সের পুরোনো বাস ও ট্রাক সড়ক থেকে অপসারণের জন্য বিআরটিএকে নির্দেশ দিয়েছে। এতে পরিবহন খাতে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। জেলায় জেলায় ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পরিবহন খাতের মালিক-শ্রমিক নেতারা ২০ জুলাই যৌথ সভা করেন। সেখানে আট দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকারকে ১৫ কার্যদিবস সময় বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
সাইফুল আলম বলেন, সড়কপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন ব্যবস্থাপনা সচল রাখার স্বার্থে আগামী ১৫ কার্যদিবস, অর্থাৎ ১১ আগস্টের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য সরকারকে অনুরোধ করছেন তাঁরা। তা নাহলে দেশের পরিবহন মালিক–শ্রমিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১২ আগস্ট সকাল ছয়টা থেকে ১৫ আগস্ট সকাল ছয়টা পর্যন্ত ৭২ ঘণ্টার জন্য সব বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, পণ্যবাহী পরিবহন ও হালকা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, যেসব গাড়ির ফিটনেস নেই বা পরিবেশদূষণ করে বলে প্রমাণিত হয়, সেগুলো নতুন বা পুরোনো যাই হোক না কেন, চলাচলের অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে। আগে নিয়ম ছিল মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি মেট্রোপলিটন এলাকায় চলতে পারবে না, কিন্তু জেলায় চলতে পারবে—এই নিয়ম বহাল রাখতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি কফিল উদ্দিন আহমেদ, কার্যকরী সভাপতি এম এ বাতেন, সহসভাপতি তোফাজ্জল হোসেন মজুমদার, বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষসহ পরিবহন মালিক–শ্রমিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।