দেশের ৮৫ শতাংশ অভ্যন্তরীণ নৌযানের লাইসেন্স নেই। দেশে বর্তমানে লক্ষাধিক অভ্যন্তরীণ নৌযান চলাচল করলেও এর মধ্যে নিবন্ধনের আওতায় এসেছে মাত্র ১৫ হাজার ৮৫০টি। এর ফলে নিরাপত্তা যেমন জোরদার করা যাচ্ছে না তেমনি সরকারও রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।
আজ মঙ্গলবার সংসদ ভবনে কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আগের বৈঠকের এ কার্যবিবরণী এদিন বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়।
কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন কমিটির সদস্য শাজাহান খান, রনজিত কুমার রায়, ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, আছলাম হোসেন সওদাগর এবং এস এম শাহজাদা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আগের বৈঠকে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, দেশে এক লাখের বেশি অভ্যন্তরীণ নৌযান চললেও মাত্র ১৫ হাজার ৮৫০টি নিবন্ধনের আওতায় এসেছে। সব নৌযান নিবন্ধভুক্ত না থাকায় আইন প্রয়োগে সমস্যা হচ্ছে। এগুলো নিবন্ধন করা গেলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে, সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। এজন্য একটি প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগের কথাও জানানো হয়।
এছাড়া বৈঠকে বিশ্বব্যাপী সি ফেয়ারারের (নাবিক) ব্যাপক চাহিদা থাকায় বিশেষ প্রোগ্রাম নিয়ে এর সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে এসএসসি বা এইচএসসি পাস করার পরে আর্থিক সংকটসহ নানাবিধ কারণে উচ্চ শিক্ষাগ্রহণ করতে না পারা শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে নৌ সেক্টরে চাকরি পাওয়ার যোগ্য করে গড়ে তোলার প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করা হয়।
এদিকে মঙ্গলবারের বৈঠকে কমিটির আগের বৈঠকে নদী কমিশনের উপস্থাপিত কিছু অভিযোগ খণ্ডন করা হয়।
ওই বৈঠকে কমিটির সদস্য নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আদালতের নির্দেশনায় জাতীয় নদীরক্ষা কমিশন গঠিত হয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ কমিশনের কিছু কিছু বক্তব্য সরকার তথা দেশের স্বার্থের অনুকূলে থাকছে না। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও সচেতন হওয়া দরকার। সরকারের সঙ্গে যারা আছেন, তারা আইন এবং সরকারের নির্দেশনার বাইরে যেন না যায় সেজন্য সংসদীয় কমিটিতে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে- পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলে নৌপরিবহন যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন হওয়ার ফলে নৌ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান প্রকল্পগুলো পুনঃসমীক্ষা করার সুপারিশ করে কমিটি।
বৈঠকে নৌরুট সচল রাখার পাশাপাশি কৃষি সহায়ক ভূমিকাতে নদীখননকে গুরুত্ব দেওয়ার সুপারিশ ককরা হয়। একই সঙ্গে যেসব ওয়াকওয়ে নির্মিত হয়েছে সেগুলো পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়।